২০১৯-২০ সালের বাজেট বাস্তবায়নে ব্যাংক থেকে টাকা ধারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
ফাতেমা ইসলাম : আসছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা ধার করতে পারে সরকার। তবে অর্থযোগানে সামর্থ্য নেই বেশিরভাগ ব্যাংকের। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজেটের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তীব্র তারল্য সঙ্কট দেখা দেয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেসরকারি খাত। চ্যানেল ২৪ ১৪:০০
উন্নয়নের জন্য বাজেটে ঘাটতি নতুন কিছু নয়। তবে ঘাটতি বাজেটের অর্থ জোগাড়ে সরকারের ব্যাংক নির্ভরশীলতা বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের সামর্থ্য বিবেচনায় বাজেট প্রাক্কলন করা না হলে আসছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি হতে পারে ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
এক্ষেত্রে ৬০ হাজার কোটি টাকা বিদেশি উৎস থেকে, ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৫৪ হাজার ৮শ কোটি ও সঞ্চয়পত্রসহ অন্যান্য উৎস থেকে ৩০ হাজার ৮শ কোটি টাকা নেযার কথা। এক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকগুলোর কিছুটা সামর্থ্য থাকলে ও প্রস্তুত নয় বেসরকারি ব্যাংকগুলো।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. শামস-উল-ইসলাম বলেন, এ বাজেটে আমাদেরই সংস্থান করতে হবে। নয়তো ফরেন ফান্ডের ওপর নির্ভর করতে হবে। তবে ফরেন ফান্ডের ওপর নির্ভর করতে হলে অনেক ধরনের শর্ত মেনে করতে হবে। যেগুলো আমাদের দেশের জন্য ক্ষতিকারক। আমরা যদি কষ্ট করে কিছু দিতে পারি তাহলে ভালো। এবং আমি মনে করি আমাদের সামর্থ্য আছে। অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং খাত থেকে যদি ৪০-৫০ হাজার কোটি টাকা নিতে চেষ্টা করে তাহলে ব্যক্তি খাতে ঋণের পরিমাণ ১২ শতাংশ থেকে কমে ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে। এটাতো কোনো মতে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তবে সব মিলিয়ে আমি দেখছি যে আর্থিক খাতে একটা বড় সঙ্কট শুরু হয়েছে এবং এটা আরো বাড়বে। এবং এর মূলে সরকারের নীতি ও সামঞ্জস্যহীনতা।
চলতি বাজেটে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা লক্ষ্য ধরা হলেও ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংক থেকে ৫ হাজর ৯৮৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে ব্যাংক খাতের তারল্য সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠেছে।
আগামী বাজেটে সঞ্চয়পত্রের নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে প্রকৃত ভোক্তাদের কাছেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু সুদহার না কমিয়ে এটি সম্ভব নয় বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি মনে করেন, সরকারের উচিৎ বাজেটের আগেই আর্থিক খাতের বাস্তবতার নিরিখে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে নেয়া। সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন