যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক দেনা ৭০ লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
নূর মাজিদ : ওয়াশিংটনে অবস্থিত বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবসাখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর বাণিজ্যিক তথ্য গবেষণা সংস্থা আইআইএফের চলতি সপ্তাহের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক দেনা এক নতুন উচ্চতা লাভ করেছে। সরকারি দেনার পরিমাণ বাড়ার কারণেই এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে সরকারি এবং বেসরকারিখাত মিলিয়ে মোট ঋণ পরিস্থিতি প্রায় ৭০ লাখ কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এই বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা। সিএনএন
বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কিন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর লিথস্টেইন বলেন, ঋণ পরিস্থিতির এই বিশাল অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। গত ২০০৭-০৮ সালের মন্দা পরবর্তী এক দশকে ঋণের মাধ্যমে সহজ বিনিয়োগ এবং মুদ্রানীতির সুযোগে দেশটির পুঁজিবাজার তেজিভাব ধরে রেখেছে। কিন্তু, এখন এই দেনা এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যার ভারে অর্থনীতিতে পাল্টা আঘাত আসতে পারে। যা অর্থনৈতিক কাঠামোর সুরক্ষা ও সামঞ্জস্য ধবংস করে দেয়ার সক্ষমতা রাখে।
২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসের শেষে দেশটির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পর্যায়ে ঋণগ্রহণ বাড়ে। যার সঙ্গে বেসরকারিখাতের দেনা যোগ হয়ে ৬৯ লাখ কোটি ডলারের বেশি ঋণের পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে। আইআইএফ প্রতিবেদনে বিষয়টিকে এভাবেই ব্যাখ্যা করা হয়। তবে এই ঋণের অংকে বাণিজ্যিক ব্যাংকিংখাতের দেয়া ঋণের অংক হিসেব করা হয়নি। যা যোগ করা হলে সার্বিক দেনা ১০৬ লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতো।
তবে ঋণের মাত্রা খুব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এমনটা মানতে নারাজ লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের বিশেষজ্ঞ রয় স্মিথ। তিনি বলেন, ঋণের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় নির্বাহ যেমন করা হচ্ছে তেমনি ব্যবসাগুলো আরো বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। সরকার এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন, সেবা ব্যবস্থার উন্নতিতে ব্যয় করছে। যা আবার পরোক্ষভাবে চলমান অর্থনীতিকে শক্তিশালী রাখার উৎসাহ যোগাচ্ছে। মার্কিন অর্থনীতির বার্ষিক আকার এখনো ২১ লাখ কোটি ডলার। এবং সেটা সবল অবস্থানেই আছে। এরপর ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর যে পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তার কল্যাণে দেনার চাপও কমবে। তবে দীর্ঘ-মেয়াদে ঋণ বাড়তেই থাকলে সেটা অবশ্যই ঝুঁকির কারণ হবে। এই অবস্থা বিবেচনা করে বিনিয়োগকারীদের সতর্কভাবে পুঁজি নিবেশের পরামর্শ দেন তিনি। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব