রাষ্ট্রীয় ৪ ব্যাংকে আর পুনঃঅর্থায়ন নয়, বললেন অর্থমন্ত্রী
ইয়াছির আরাফাত : রাষ্ট্রীয় সোনালী, রূপালী, জনতা ও অগ্রণী এ চার ব্যাংকে আর রিফাইন্যান্সিং (পুনঃঅর্থায়ন) করা হবে না। বাজেটেও এসব ব্যাংকের জন্য বরাদ্দ থাকবে না। এসব ব্যাংককে নিজের টাকায় চলতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রোববার শেরে বাংলানগর এনইসি মিলনায়তনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, এবার বাজেটে ব্যাংকগুলোর জন্য বরাদ্দ আছে। তবে সামনে আর বরাদ্দ রাখা হবে না। জনগণকে সেবা দিয়ে আয় করেই ব্যাংকগুলোকে চলতে হবে। চার ব্যাংককে সাতদিনের কর্মপরিকল্পনা বেঁধে দেয়া হয়েছে। সাতদিন পর তারা ব্যাংকের কর্মপরিকল্পনা আমার কাছে নিয়ে আসবে। সরকার এগুলো দেখবে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে। আমরা তাদের অর্থায়ন ছাড়া অন্য সহায়তা করবো।
ব্যাংকগুলো প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চারটি ব্যাংকের এলাকা অনেক বড়, প্রায় ২৫ শতাংশ। চারটি ব্যাংককে লোকসান কমিয়ে এনে ১৫ শতাংশ লাভ করতে হবে। জনগণকে সেবা দিয়ে মুনাফা বাড়াতে হবে। অর্থনীতি মানুষের জন্য। সরকার এমন কিছু করবে না, যাতে জনগণের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তিনি আরো বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার বিষয়ে শিগগরিই সার্কুলার জারি করা হবে। খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, এক্সিট প্ল্যান (খেলাপি ঋণ কমানো পরিকল্পনা) বাস্তবায়িত না হওয়ায় খেলাপি ঋণ বেশি দেখাচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন হলেই খেলাপি ঋণ অনেক কমে আসবে। এই এক্সিট প্ল্যান আদালতে আছে। এটা বিচারাধীন থাকায় এবিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। আইনের দ্রুত সুরাহা হলেই খেলাপি ঋণের বর্তমান চিত্র থাকবে না। আইনটি বাস্তবায়নাধীন থাকায় অনেক ব্যবসায়ী খেলাপি ঋণ পরিশোধ করছেন না।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা অবকাঠামো খাতে অনেক বিনিয়োগ করেছি। বর্তমানে এসবের সুফল পাবো। এসবের সুফল পেতে থাকলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে নামবে না। আমাদের আর্থিক খাত ঠিকভাবে চলছে। আমরা অর্থনীতির সবখাতেই ভালো করছি। দেশে রপ্তানি বাড়ছে। যারা বলছে রপ্তানি কমছে তারা অসত্য বলছে। পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজার সঠিকভাবে চলছে। এখানে বাইরের পুঁজি নেই। পুঁজিবাজার আমাদের ক্ষতির কারণও হবে না।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ, অর্থ-সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন আহমেদ, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম প্রমুখ। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান