যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে ভিয়েতনামকে ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ
স্বপ্না চক্রবর্তী : যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি ভিয়েতনামকে পেছনে ফেললো বাংলাদেশ। মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ভিয়েতনামের চাইতে ৩ শতাংশ বেশি। এটাকে দেশের উদ্যোক্তারা তৈরি পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে নতুন মাইলফলক হিসেবে মনে করছেন।
সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) বিভিন্ন দেশে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক আমদানির হালনাগাদ চিত্রে এ তথ্য দেওয়া হয়। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে ৪ হাজার ৪ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার মধ্যে শীর্ষ ছয় দেশ থেকে ২ হাজার ৬৮৭ কোটি ডলারের পোশাক গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ২০১৭ সালে ৫০৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। তখন রপ্তানি কমেছিল সাড়ে ৪ শতাংশ। আর চলতি বছরের প্রথমার্ধে ৩০৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ সময়ে রপ্তানি বেড়েছে গত বছরের প্রথমার্ধের চেয়ে ১৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এর প্রেক্ষিতে ভিয়েতনাম ২০১৭ সালে ১ হাজার ১৫৬ কোটি ডলার পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রবৃদ্ধি করেছিল ৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে সেটি বেড়ে ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে। তার বিপরীতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি পৌনে ৩ শতাংশ বেশি।
দেশটিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে যাওয়াকে দেশের পোশাক খাতের জন্য মাইলফলক হিসেবে দেখছেন দেশের তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীরা। তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধ্বসের পর বিশে^র অন্যান্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও আমাদের পণ্য রপ্তানি কমে যায়। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি দেশটিতে আমাদের পণ্য রপ্তানি বাড়াতে। আমরা আমাদের নিজেদের পণ্যের ব্র্যান্ডিং করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে এই বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। যার ফলে গত বছর সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ৫৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের পণ্যের রপ্তানি বাড়লেও ক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে না। এই অবস্থা থেকেও উত্তোরণের চেষ্টা করছি আমরা।
অটেক্সা কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিয়েতনাম ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পর্যায়ের রপ্তানিকারক দেশ চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও মেক্সিকোর চেয়ে প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। যদিও পোশাক রপ্তানির পরিমাণের দিক দিয়ে চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে বেশ পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ তবু এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে বাংলাদেশের পোশাক খাত শীর্ষস্থানে পৌঁছানো সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর আমাদের অনেক ক্রেতাই চলে গিয়েছিল। আমরা তাদের ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এই অবস্থা চললে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয় বিশে^র অন্যান্য বাজারগুলোতেও তৈরি পোশাকের রফতানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নামই শীর্ষে থাকবে বলে আমরা আশা করছি। সম্পাদনা : ইকবাল খান