আগা খান আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত সেই স্কুলের পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ
তাপসী রাবেয়া : বাঁশের তৈরি নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী স্কুলটি তৈরির জন্য স্থপতি সাইফ-উল-হক এবছর জিতেছেন আগা খান এওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার-২০১৯। কেরানীগঞ্জ উপজেলার হযরতপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানারচর এলাকায় মালেকা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পরিচালিত আর্কেডিয়া এডুকেশন প্রজেক্টের আওতায় নির্মিত হয়েছে এই স্কুল। স্কুলটি শুষ্ক মৌসুমে মাটিতে এবং বর্ষায় পানিতে ভাসতে থাকে। তবে এবার বর্ষায় পানি একটু বেশি হওয়ায় সাময়িকভাবে এখানে বন্ধ রয়েছে পাঠদান কর্মসূচি। আলিপুর ব্রিজের পশ্চিমপাশে ধলেশ্বরী নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে নির্মিত হয়েছে বাঁশের তৈরি একটি অবকাঠামো। দূর থেকে বোঝার উপায় নেই এটি একটি স্কুল। সেখানে গিয়ে কথা হয় স্কুলটির সার্বক্ষণিক কাঠমিস্ত্রির দায়িত্বে থাকা প্রাণ বল্লভের সঙ্গে।তিনি বলেন, প্রায় দেড়শো ফুট লম্বা ও পয়ত্রিশ ফুট প্রশস্ত অবকাঠামোতে রয়েছে শিশুদের লেখাপড়ার মতো সব সুযোগ সুবিধা। উভচর এ অবকাঠামোতে শিশুদের পাঠদানের তিনটি কক্ষ ছাড়াও রয়েছে তাদের খেলার জায়গা ও টয়লেট। শ্রেণিকক্ষের নামগুলোও একদম ভিন্ন। চমকপ্রদ নাম রাখা শ্রেণিকক্ষ গুলো হলো সিন্দু, বিন্দু ও কণা। এখানে রয়েছে সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা। স্কুলটিতে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য রয়েছে বাঁশের তৈরি র্যাম্প, যদিও বর্ষার কারণে এখন সেটা নষ্ট হয়ে গেছে। স্কুলের টয়লেটের বর্জ্য ফেলার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে সেফটিক ট্যাংক। এই ট্যাংকও মূল অবকাঠামোর মতোই উভচর।স্কুলের প্রশাসক সালাম মিয়া জানান, রাজিয়া আলম নামে এক নারী স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। চিকিৎসার জন্য তিনি এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। প্রথমে ২০০৯ সালে সাভারের নগরকুড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি এ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তিতে সেখান থেকে স্থানান্তরিত হয়ে ২০১২ সালে হযরতপুরের কদমতলী এলাকায় আবারও ভাড়া বাসায় নিয়ে আসা হয় স্কুলটি। এরপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে কেরানীগঞ্জের হযরতপুরের কানারচরে জমি ক্রয় করে এই স্কুলটি নির্মাণ করেন। বাঁশ দিয়ে স্কুলটি নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয় স্থপিত সাইফ উল হককে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্কুল নির্মাণের কাজ শেষ হয়। এখানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। এমনকী শিক্ষার্থীদের বই ও শিক্ষা উপকরণও স্কুল কর্তৃপক্ষই দেয়। শিক্ষার্থীদের নাস্তাও খাওয়ানো হয়।বর্ষায় শিশুদের আসতে কষ্ট হচ্ছে তাই বিকল্প হিসেবে একটু শুষ্ক স্থানে ভাড়া বাসায় চলছে এখন স্কুলের কার্যক্রম। সম্পাদনা : সমর চক্রবর্তী