৩ হাজার ৯শ কোটি টাকার আপেলের বাজারে ভাগ বসিয়েছে দেশের থাই পেয়ারা
মতিনুজ্জামান মিটু : কমেছে আপেলের আমদানি, বেড়েছে পেয়ারার রপ্তানি। ফলের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বিদেশি আপেলের। প্রতি বছর গড়ে ১৫ ভাগ হারে বাড়ছিলো এই বিদেশি ফলের আমদানি। আগে প্রতিদিন গড়ে ৭ লাখ আমদানি হলেও এখন তা নেমে এসেছে ৫ লাখ কেজিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইং এর পরিচালক ড. আজহার আলী জানান, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আপেল আমদানি হয় ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৮ দশমিক ২৪২ মেট্রিক টন আপেল আমদানি হয়। যা আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ৪৭ হাজার ৪৩৫ দশমিক ৮১৯ মেট্রিক টন কম। এসময় আমদানি হয় ২ লাখ ১৬ হাজার ৮৪ দশমিক ০৬১ মেট্রিক টন আপেল। তিনি জানান, দেশ থেকে পেয়ারা রপ্তানির পরিমাণও বাড়ছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশ থেকে রেকর্ড পরিমাণ ২২৮ দশমিক ০৬১ মেট্রিক টন পেয়ারা রপ্তানি হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে পেয়ারা রপ্তানি বৃদ্ধির এধারা অব্যাহত রয়েছে। এর আগের ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশ থেকে সর্বপ্রথম দশমিক ০৭ মেট্রিক টন পেয়ারা রপ্তানি হয়। যা ২০১৭-১৮ অর্থবছর ছাড়া বাকী সময়ে বেড়েছে। দেশে থেকে ক্রমবর্ধমান হারে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৮দশমিক ০৬ মেট্রিক টন ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৫৩ দশমিক ০২৫ মেট্রিক টন পেয়ারা রপ্তানি হয়। যা কমে ২০১৭-১৮ সালে দাঁড়ায় ৮২ দশমিক ৭২৭ মেট্রিক টনে।
কৃষিকথায় প্রকাশিত ফল বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ২০১৯ উপলক্ষে কৃষি তথ্য সার্ভিসের রচনা প্রতিযোগিতার প্রথম স্থান অধিকারী মনোরঞ্জন রাজবংশীর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদেশ থেকে আপেল আমদানিতে প্রতিবছর গড়ে ১ হাজার ৮০ কোটি টাকার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। শুল্ককর পরিশোধ করে এই আপেল ক্রেতাদের হাতে পৌঁছায়। খুচরা বাজারের হিসেবে দেশে শুধু আপেলের বাজারই রয়েছে ৩ হাজার ৮৬০ কোটি টাকার। বিদেশি আপেলের এই বড় বাজারে ভাগ বসিয়েছে দেশে উৎপাদিত থাই পেয়ারা।
আপেলের চেয়ে দাম কম, রাসায়নিকমুক্ত ও নিরাপদ হওয়ায় মানুষ এখন আপেলের বদলে পেয়ারা বেছে নিচ্ছেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে এখন পেয়ারার ছড়াছড়ি। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আপ্যায়নেও জায়গা করে নিয়েছে পেয়ারা। আর তাতেই আপেল আমদানি কমে যাচ্ছে। শুধু আপেলই নয়, আপেলের মতো নাশপতি এবং বিভিন্ন ধরনের সাইট্রাস বা লেবু জাতীয় ফলের আমদানিও কমেছে।
বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মেহেদী মাসুদ জানান, জিডিপিতে কৃষির অবদান বাড়াতে দেশের ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের হিসেবে গত ৫ বছরের হিসেবে দেশে ফলের উৎপাদন বেড়েছে ২১ লাখ কেজি। জাতীয় অর্থনীতিতে দেশি ফলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে ফল চাষসহ কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের প্রকল্পসহ কার্যকর নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রেজা