কাক্সিক্ষত মূল্য না পাওয়ায় পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের সোনালী আঁশ পাট চাষিদের মাঝে চরম দুর্দিন নেমে এসেছে। পাটের কাক্সিক্ষত মূল্য না পেয়ে তারা ক্রমেই পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। গতবারের তুলনায় মুকসুদপুর উপজেলায় পাটের আবাদ কিছুটা কমে গেছে। পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া, পোকা মাকড়ের আক্রমণ রোধে কৃষি বিভাগের সহায়তা থাকলেও পাট জাগ দিতে জলাশয়ের অভাব ও ভালো মানের বীজে পাটের আবাদ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। দেশের সর্বাধিক গুণগত মান সম্পন্ন পাট উৎপাদিত হয় এই মুকসুদপুর অঞ্চলে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলার কৃষকের চাষাবাদি জমির পরিমাণ ২৩ হাজার ৯৮৮ হেক্টর। মুকসুদপুরে ৫৪ হাজার ৬২৯টি কৃষি পরিবার রয়েছে। উপজেলায় এ বছরে ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ২০১২-১৩ মৌসুমে পাটের ভালো মূল্য পাওয়ায় কৃষকেরা ব্যাপক হারে পাট আবাদে ঝুঁকে পড়ে ছিল। কিন্তু কাক্সিক্ষত মূল্য না পেয়ে তারা ক্রমেই হতাশ হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন প্রসিদ্ধ হাটে পাট বিক্রি করতে এসে কৃষকেরা অনেকটা বাধ্য হয়েই লোকসান দিয়ে পাট বিক্রি করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে পাটের আবাদ কমে যাবে বলে কৃষকদের আশঙ্কা।
তবে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর দাবি করছে, বর্তমানে উচ্চ ফলনশীল জাতের পাটবীজ ব্যবহারের মাধ্যমে পাটের আবাদ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। মুকসুদপুর প্রসিদ্ধ সদর বজার, বনগ্রাম, বাটিকামারী, গোহালা, নারায়নপুর বাজারসহ পাটের বড় হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে ভালো মানের এক মণ সোনালী আশ বিক্রি হচ্ছে ১৫শ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৭শ টাকা দরে। আর সাধারণ মানের পাট বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে ১৪ শ টাকা দরে। পাটকলগুলোর ফান্দে পড়ে ফড়িয়া মহাজনদের সিন্ডিকেট দখল করেছে এসব বাজার। কৃষকেরা বাধ্য হয়ে কম মূল্যে পাট বিক্রি করছে তাদের নিকট। সংঘবদ্ধ এই চক্র আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের দাম কমে যাওয়ার অজুহাতে পাটের দরপতন ঘটাচ্ছে।
কৃষকেরা জানান, বাজারে ঘুরে কৃষকদের পাট বিক্রি করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আগে পাট নিয়ে বাজারে গেলে ব্যবসায়ীরা টানা হেচঁড়া শুরু করে দিত। সেখানে এখন পাট নিয়ে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বসে থেকে বাধ্য হয়ে কম মূল্যে পাট বিক্রি করছেন। সিন্ডিকেটের কারণে পাটের বাজার ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় বর্তমানে ১ মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১২শ থেকে সর্বোচ্চ ১৭শ টাকা দরে। সম্পাদনা: তারেক