করোনা তান্ডব থেকে দেশের অর্থনীতি ও মানুষকে রক্ষায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বিশ্বজিৎ দত্ত : [২] ৫ আর্থিক প্যাকেজ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এই প্যাকেজে আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে দেশের মোট জিডিপির ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। বিশ্বব্যাপি করোনা সংকটে আমাদের অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে, তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী, ৪টি কার্যক্রম তুলে ধরা হয় কর্মপরিকল্পনায়।
[৩] প্রধানমন্ত্রী পুরো প্যাকেজে জোর দেন, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ, সামাজিক সুরক্ষা ও মুদ্রা সরবরাহ ব্যবস্থায়।
[৪] বড় শিল্প ও সেবাখাতের জন্য ৩০ হাজার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বরাদ্দের ঘোষণা দেয়া হয় । বড় শিল্প ও সেবা খাতে সুদ নির্ধারণ করা হয় ৯ শতাংশ। এর অর্ধেক সুদ পরিশোধ করবে সরকার আর অর্ধেক মালিকরা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৫ শতাংশ সুদ দিবে সরকার ও মালিকরা দিবে ৪ শতাংশ।
[৫] করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে আরো বিস্তৃত করা হয়েছে। আরো ১৬০ উপজেলায় সকল দরিদ্র মানুষদের খাবার, ওষুধ, নগদ অর্থও প্রদান করা হবে।
[৬] অসংঘটিত শিল্পের শ্রমিকদের বিশেষ করে, মুচি, বেদে, নাপিত, মাটির কাজ করেন, অস্থায়ী শ্রমিক, এধরনের নানা পেশার গরীব মানুষদের সেফটি নেটের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন।
[৭] ব্যাংকগুলোতে নগদের জোগান বাড়াতে, রেপো ও সিআর আর কমানোর কথাও বলা হয়েছে। তবে সতর্ক করা হয়েছে যাতে মূল্যস্ফীতি না হয়। [৮] রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন আগের ঘোষিত ৫ হাজার কোটি রয়েছে। [৯] শুধু খাদ্য নয়, গরীব মানুষদের নগদ টাকার যোগান বৃদ্ধির জন্য সরাসরি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে অর্থ দেয়া হবে। এ ছাড়াও ওএমএস, জিআর কর্মসূচির অর্থ বৃদ্ধির কথা বলা হেয়েছে।
[১১] এসব আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এবং বাংলাদেশ কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাছাকাছি পৌঁছতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বলেন, সম্ভাব্য এ বৈশ্বিক ও দেশীয় অর্থনৈতিক সঙ্কট হতে উত্তরণের জন্য রপ্তানি খাতের পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ‘আশ্চর্য সহনশীলতা’ এবং ‘ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা’ রয়েছে। ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যে জাতি মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেÑসে জাতিকে কোনো কিছুই দাবিয়ে রাখতে পারবে না, এটা জাতির পিতা নিজেই বলে গেছেন।