ফেসবুকে বাংলাদেশ…
ব্লগ বন্ধ করার নিন্দা জানাই
পিনাকী ভট্টাচার্য, চিকিৎসক ও কলামিস্ট
ইস্টিশন ব্লগটা আমার বেশ পরিচিত। এখানে নিয়ম করে আমার চৌদ্দগোষ্ঠীর পি-ি চটকানো হতো। আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করতাম, সেই ব্যক্তিগত আক্রমণ করে লেখাগুলোর প্রথম উৎসাহ সূচক কমেন্ট থাকত খোদ ব্লগের মালিকের। বাংলা ব্লগের ইতিহাসে এই ঘটনা অভুতপুর্ব। ব্লগে প্রকাশিত কোনো লেখায় ব্যক্তিগতভাবে কেউ সংক্ষুদ্ধ হলে ব্লগ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেওয়ার রাস্তা ব্লগের মালিক একটা পক্ষ নিয়ে নিজেই বন্ধ করে দেয়। বাংলা ব্লগিং এ এই ন্যাক্কারজনক ইতিহাসের স্রষ্টা ইস্টিশন ব্লগ।
ইস্টিশন ব্লগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আজ অনেকের আহাজারির সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম, এই তৃতীয় শ্রেণির ব্লগটি নাকি মুক্তমনা ও প্রগতিশীল! ন্যূনতম বুর্জোয়াসুলভ লিবারেল ভ্যালুজ যারা মেইন্টেইন করতে পারে না তারা প্রগতিশীল হয় কীভাবে?
তবুও আমি ব্লগ বন্ধ করার নিন্দা জানাই; সেটা ইস্টিশনের মতো তৃতীয় শ্রেণির, পশ্চাৎপদ, ঘৃণা প্রচারক, ফালতু ব্লগ হলেও।
খুনি হামিদ মিয়ার হাতে হাতকড়া দেখতে চাই
ডা. ইমরান এইচ সরকার, মুখপাত্র, গণজাগরণ মঞ্চ
আর কত নিষ্ঠুরতা! বখাটে তরুণের উত্যক্তের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট কেবি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল ডালিয়া। বখাটে হামিদ মিয়া তাকে যাতায়াতের পথে ও ফোনে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল। একপর্যায়ে অপমান সহ্য করতে না পেরে রবিবার বিকালে আত্মহত্যা করে ডালিয়া।
এটিকে কি আত্মহত্যা বলে? না। এটি স্পষ্ট খুন। কোমলমতি একটি শিশুকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া। অথচ ঘটনার আটচল্লিশ ঘণ্টা পার হতে চললেও পুলিশ এখনও অপরাধী হামিদ মিয়াকে ধরতে পারেনি। অবিলম্বে খুনি হামিদ মিয়াকে গ্রেফতার দেখতে চাই। ডালিয়ার বাবা দরিদ্র হকার। আমরা জানি এদেশে বিচার পেতে হলে ক্ষমতাশালীর আশীর্বাদপুষ্ট হতে হয়। তাই সাধারণ মানুষকেই জাগতে হবে। জনতা জেগেছিল বলেই রাজন, রাকিব, রিশার খুনিরা ধরা পড়েছিল। আসুন ঐক্যবদ্ধ হই, ডালিয়ার বাবা হকার বলে কি বিচার পাবেন না? স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনি হামিদ মিয়ার হাতে হাতকড়া দেখতে চাই।
অবিলম্বে ইস্টিশন খুলে দেওয়া হোক
ফিরোজ আহমেদ, কেন্দ্রীয় সদস্য, গণসংহতি আন্দোলন
ইস্টিশন নামের ব্লগটাতে নাকি বাংলাদেশ থেকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ইস্টিশন পড়েছেন এমন সকলেই ব্লগটির অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদবিরোধী এবং একইসঙ্গে লুণ্ঠন ও অপশাসন বিরোধী চরিত্র সম্পর্কে জানেন। ইস্টিশন সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে এককভাবে সবচেয়ে অগ্রসর ভূমিকা রেখেছে।
জনগণের মুখ বন্ধ রাখতে সরকারের এই ঘোরতর অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই। প্রযুক্তি মানুষকে সংবাদ জানার এবং মতপ্রকাশের সুবিধা দিয়েছে, সবটুকুর ওপরই নিয়ন্ত্রণ আরোপে সরকার মরিয়া। মনে রাখবেন, সরকারের পাশাপাশি আছে মোসাহেবদের বিশাল বাহিনীও। ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুকথা লিখলে মাসের পর মাস গ্রেফতার তাদের চোখে বৈধ, ইস্টিশন বন্ধ করার বিষয়েও তারা প্রতিবাদ করবে না। ব্লগারদের গণগ্রেফতারের সময়েই এরাই লিখে লিখে প্রতিবাদের রাস্তা বন্ধ করতে কলম বন্ধ আন্দোলন করেছিলÑ যেন ব্লগাররা সরকারের বেতন নেওয়া কলমজীবী!
অবিলম্বে ইস্টিশন খুলে দেওয়া হোক। অন্তর্জাল হোক মতামত ও তথ্য আদান-প্রদানের মুক্তভূমি। এই স্বাধীনতা রক্ষায় মাঠে সক্রিয় কর্মসূচিও চাই।