[১]সবাই বলে ভাইরাস গেলে পত্রিকা নিবে, চলব কিভাবে?
বিডিনিউজ : [২] রফিকুল ইসলাম প্রতিদিন নগরীর লাভ লেইন-আগ্রাবাদ-দেওয়ানহাট এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়িতে পত্রিকা বিলি করেন। জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে তিনশ পত্রিকা বিলি করতেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ‘সাধারণ ছুটি’ শুরুর পর সেই সংখ্যা কমে ৮০-৯০টিতে এসে ঠেকেছে।
[৩] ছাপানো পত্রিকার বিক্রি কমে যাওয়ায় রফিকের মতোই বিপাকে পড়েছেন চট্টগ্রাম মহানগরীতে পত্রিকা বিলিকারী হাজারের বেশি হকার। ছাপানো সংবাদপত্রের বিক্রি কমতে থাকায় সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে তা শংকিত সবাই। [৪] ছাপানো পত্রিকার মাধ্যমে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে এমন শংকায় বাসাবাড়িতে নিয়মিত পত্রিকা নেয়া কমিয়ে দিচ্ছেন গ্রাহকরা। তাছাড়া অনেক পত্রিকারই ছাপানো সংস্করণও বন্ধ হয়ে গেছে। [৫] সবমিলিয়ে সঙ্কটে পড়া হকাররা সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতাও প্রত্যাশা করছেন। [৬] হকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আগে গ্রাহকরা সকালে পত্রিকা দিতে দেরি হলে বকা দিতেন, এখন বলছেন আর পত্রিকা দিও না, পরে দিন ভালো হলে আবার নেবেন বলছেন।
[৭] ২৫ মার্চ সরকারি ছুটি ঘোষণার পর কয়েকদিন পত্রিকা বিক্রি ঠিক থাকলেও এপ্রিল মাসের শুরু থেকে কমতে শুরু করে বলে রফিক জানান।
[৮] নগরীর হেমসেন লেইনে স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে একটি ছোট বাসায় তার সংসার। পত্রিকা বিক্রি কমে যাওয়ায় ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত রফিক। [৯] নগরীর জামাল খান এলাকার হকার আবদুর রহিমেরও একই অবস্থা। তিনি প্রতিদিন জাতীয় ও স্থানীয় মিলিয়ে ১২০টির মতো পত্রিকা বিলি করতেন বাসাবাড়িতে। আর এখন তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৪০টিতে। তিনি বলেন, যারা বছরের পর বছর ধরে পত্রিকা নিচ্ছে তারা হুট করে মার্চের শেষে এসে বলছেন সামনের মাস থেকে পত্রিকা দেয়া বন্ধ করে দাও। করোনা চলে গেলে পরে আবার নেব। প্রায় সব হকারের ক্ষেত্রে এমন ঘটছে।
[১০] আতুরার ডিপো এলাকায় স্ত্রী-দুই সন্তান নিয়ে থাকা রহিম বলেন, এ মাসে গ্রাহকরা টাকা দিয়ে পত্রিকা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। মার্চ মাসের টাকা এপ্রিলে পেয়েছি। কিন্তু এপ্রিলে তো আর পত্রিকা বিলি হয়নি। সামনের মাসে তো আর নিয়মিত রোজগার থাকছে না। সামনের মাস থেকে আমাদের চলা কষ্টকর হয়ে পড়বে। গ্রন্থনা : সিরাজুল ইসলাম।