সমুদ্রের জীববৈচিত্র রক্ষায় অতিরিক্ত মাছ শিকার বন্ধের তাগিদ বিজ্ঞানীদের
শোভন দত্ত : ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) দ্রুত সমুদ্রে অতিরিক্ত মৎস্য আরোহণ বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে। তিন শতাধিক বিজ্ঞানী সম্প্রতি এমন একটি বিবৃতি দিয়েছেন।
বিজ্ঞানীদের বার্তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিবেশ ও জলবায়ু, সমুদ্র ও মৎস্য শাখার প্রধান ভিরগিনিজুস সিনকেভিসিয়াস বরাবর পাঠানো হয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুতে পাঠানো এ বিবৃতিতে বলা হয়, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র রক্ষায় মৎস্য আরোহণের সর্বোচ্চ সীমা দ্রুত নির্ধারণ করতে হবে।
এতে বলা হয়, সমুদ্রে জলজপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাসে অতিরিক্ত মৎস্য আরোহণ অন্যতম প্রধান কারণ। যখন অতিরিক্ত মাছ ধরা হয় তখন আর শূন্যস্থান পূরণ হয় না। এই শূন্যস্থান সমুদ্রে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।
এ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী এক বিজ্ঞানী ড. রাইনের ফ্রঁসে বলেন, ‘অতিরিক্ত মৎস্য আরোহণের অর্থ হলো সমুদ্র থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি মাছ সংগ্রহ করা। সত্যিকার অর্থে, এটি সম্পূর্ণই বোকামি ছাড়া কিছু নয়। এতে জলজপ্রাণীর ভা-ার ছোট হয়ে যায়, আর ভা-ার ছোট মানে পরে আর মাছ না পাওয়ার ঝুঁকি। ফলে এটা বোকামি। অতিরিক্ত মৎস্য আরোহণ আসলে মাছ শিকারিদের সাহায্য করছে না। আসলে কারো জন্যই এটি ভালো নয়’।
রেভ ওসে- এর বিজ্ঞানী অধ্যাপক অ্যালেক্স রজার্স বলেন, ‘অতিরিক্ত মৎস্য আরোহণ জীববৈচিত্র ধ্বংসের সবচেয়ে বড় কারণ। আমাদের প্রয়োজন সুস্থ ও উৎপাদনক্ষম সমুদ্র। আর এমন সমুদ্র পেতে অতিরিক্ত মৎস্য আরোহণ বন্ধ করা হচ্ছে চাবিকাঠি’।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (ডব্লিউডব্লিউএফ) নামে জীববৈচিত্র রক্ষার সঙ্গে জড়িত একটি সংগঠনের প্রতিবেদনে জানানো হয়— ৫০ বছরে বিশ্বে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে ।
জীববৈচিত্র সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞরা কয়েক হাজার প্রজাতির বন্যপ্রাণীর ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন স্তন্যপায়ী, খেচর, উভচর, সরীসৃপ এবং মৎস্যকুলের মধ্যে অন্তত ২০ হাজার প্রজাতি ১৯৭০ সালের পর বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
এছাড়াও, ২০০০ সালের পর থেকে ১৯ লাখ বর্গকিলোমিটার বন্যপ্রাণীর আবাসভূমি বিলুপ্ত হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে বন্যপ্রাণীর ১০ লাখ প্রজাতি। এ সময়ে ১৩০ কোটি টন খাদ্য নষ্ট করা হয়েছে। এ বাবদে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। সূত্র : ইউরোনিউজ, বিবিসি, রয়টার্স, সারাবাংলা।