আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
ভারতের পেঁয়াজ এখনও ঢোকেনি তবে পথে রয়েছে ২০ হাজার টন জানিয়েছে এক্সপোর্ট এ্যাসোসিয়েশন
বিশ্বিজিৎ দত্ত: ভারত থেকে গতকাল কোন পেঁয়াজের ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। তবে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি স্থল বন্দরের কাস্টম কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দু’এক দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের ট্রাক বন্দরে পৌঁছবে বলে তারা খবর পেয়েছেন।
অন্যদিকে ভারতের ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট এ্যসোসিয়েশনের আঞ্চলিক চেয়ারম্যান সুশীল পাটোয়ারি জানিয়েছেন, ২০ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে রফতানির অনুমতি তারা পেয়েছেন। এগুলি বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যেই এগুলো পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। ১২ সেপ্টেম্বর ভারত পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এই খবর বাংলাদেশে প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। গত বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশে পেঁয়াজের সংকট নেই। এখন পর্যন্ত যে পেঁয়াজ রয়েছে তাতে আরো কয়েক মাস চলবে, সংকট হবে না। তবে ভারত ছাড়াও তুরস্ক ও চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রীর এই ঘোষণার পর গতকাল বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কমতে শুরু করেছে। বিদেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। কাওরান বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা (৫ কেজি) পাল্লা। দেশি পেঁয়াজের দাম তেমন কমেনি। প্রতি ৫ কেজি কাওরান বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩৮০ টাকা দরে। অন্যান্য বাজারে খুচরা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। ভারতের পেঁয়াজ আসার বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার নেয়ামুল ইসলাম বলেন, বেনাপোলে কোনও পেঁয়াজের ট্রাক খালাস হয়নি। তবে কিছু ট্রাক আসছে বলে সিএন্ডএফ এজেন্টরা জানিয়েছে। তিনি বলেন, পেঁয়াজ আসলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে তা খালাস করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আসে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে। সেখানকার সহকারী কমিশনার আমির মামুন জানান, পেঁয়াজ খালাস হয়নি। আগামী ২ এক দিনের মধ্যে পেঁয়াজের কিছু ট্রাক আসবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে মোট পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ২৫ লাখ টন। এব বছর পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৪ লাখ টন। সংরক্ষণের অভাবে এ বছর ৭ লাখ টন পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। তাতে দেশে মোট পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দিয়েছে ৮ লাখ টনের। এই ঘাটতি পূরণে সরকার পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারত হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ সরবরাহকারী দেশ। এরবাইরে মায়ানমার, তুরস্ক, মিশর ও চীন থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করা হয়ে থাকে।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, তারা চলতি বছর ১২ লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। যার মোট মূল্য ৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ পাবে ২৪ শতাংশ, মালয়েশিয়া ১৯. আরব আমিরাত ১০, শ্রীলংকা ১৩ নেপাল ৪ শতাংশ। মহারাষ্ট্রের লাসাল গাঁও হলো ভারতের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের আড়ৎ। সেখানকার কৃষকরা পেঁয়াজ রপ্তানির পক্ষে আন্দোলন করলেও বিহার নির্বাচনের কারণে কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। কারণ বিহারের লোকজন যাতে সস্তায় পেঁয়াজ কিনতে পারে। লাসাল গাঁওয়ে গতকাল ১৫০০ রূপিতে ১০০ কেজি বিক্রি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে গতকাল পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি দরে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব