সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ কৃষক
রোকনুজ্জামান মিলন, ঝিনাইদহ : চলতি বোরো মৌসূমে সরকারি ভাবে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে। কিন্তু ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার প্রকৃত কৃষকরা ধান বিক্রি করতে না পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। ভুক্তভুগী কৃষকদের অভিমত কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধিসহ ধানের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভরা মৌসুমে খোলা বাজারে ধান বিক্রি করে একজন কৃষককে প্রতিমণ ধানে ৩’শ থেকে সাড়ে তিন’শ টাকা লোকশান গুনতে হচ্ছে।
কৃষকদের এ দুর্দশা লাঘবে কৃষক বান্ধব সরকার প্রতিমণ ধান ৯’শ ২০ টাকা মূল্যে সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ক্রয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান সরকারি মূল্যে বিক্রি করতে গেলে নানামুখি হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কৃষকদের কাছ থেকে ধান না নেওয়ায় তারা উপজেলা প্রশাসনসহ কৃষি ও খাদ্য বিভাগকে দায়ি করছেন। গত মে মাস থেকে ধান ক্রয় করার কথা থাকলেও ওসিএলএসডির গাফলতির কারণে ধান ক্রয় শুরু করেছেন জুন মাস থেকে। সারাদেশে একযোগে সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু হলেও হরিণাকুন্ডু উপজেলার একটি মাত্র খাদ্য গুদামে এখনো পর্যন্ত এক কেজি ধানও প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছ্।ে ওসিএলএসডি রাতের আধারে এক শ্রেণির সুবিধাভুগী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে নিম্নমানের ধান ক্রয় করে গুদাম জাত করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আরশেদ আলী চৌধুরী বলেন, খাদ্য বিভাগ থেকে তার কাছে কৃষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। ধান চাষিদের তালিকা প্রস্তুত করে দেয়া হয়েছে। এবং গুদামে কৃষকদেরই ধান দেয়ার কথা। কিন্তুএখন কি হচ্ছে তিনি দাপ্তরিক কাজে ঢাকায় থাকায় বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) জহুরুল ইসলামকে কৃষকদের নিকট থেকে ধান না ক্রয় করা সম্পর্কে মোবাইলে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কোন কৃষক ধান নিয়ে গুদামে আসেনি, ফলে কৃষকদের নিকট থেকে ধান ক্রয় করা সম্ভব হয়নি। কৃষক ধান নিয়ে এলে আমরা তা ক্রয় করব। এসব নিয়ে পত্রপত্রিকায় নিউজ করে কোন লাভ হয়না বলে তিনি অনেকটা উপহাস করেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি এ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন বলতে বলতে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ধান ক্রয় কমিটির সভাপতি মনিরা পারভীন বলেন বোরো ধান ক্রয়ের অভিযান চলছে। গুদামে কৃষকদেরই ধান দেয়ার কথা এবং প্রকৃত কৃষকরাই তা দিচ্ছেন বলে তিনি জানান। তবে ভিন্নমত পোষন করে হরিণাকুন্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. এমএ মজিদ বলেন, তার দপ্তর থেকেও প্রকৃত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দেওয়া হয়েছে।