‘আন্তর্জাতিক বাজারে এলপি গ্যাস ও সিলিন্ডারের দাম বাড়লে ব্যবসায়ীদের বিইআরসির কাছে আসা উচিত’
ভূঁইয়া আশিক রহমান : কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ¦ালানি উপদেষ্টা (ক্যাব) অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেছেন, এলপি গ্যাস ও সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করার এখতিয়ার হচ্ছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)। কিন্তু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েই যাচ্ছেন আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে। আইন মানছে না। এটা তো একটা খারাপ সংস্কৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আইন না মানার সংস্কৃতি যদি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, সমাজকে তো আমরা বনজঙ্গলে পরিণত করে ফেলবো। পশুরাও তো বনজঙ্গলের আইন মেনে বনেই থাকে। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, উৎপাদকেরা যদি লোকসানে পড়েন, তাহলে তারা প্রয়োজনে ব্যবসা করবেন না। লোকসানে গিয়ে কতো ব্যাংক, প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে গেছে না। লোকসানের যুক্তিতে এলপি গ্যাস ও সিন্ডিারের দাম বাড়াবেনÑ তা তো হতে পারে না। আইন তো ভোক্তার স্বার্থসুরক্ষায় হতে হবে। ব্যবসায়ীরা ভোক্তার অধিকার রোধ করে মুনাফা বৃদ্ধি করবেন, বছরের পর বছর ধরে তারা এমনটি তারা করে আসছেন। গণশুনানি করে গত আগস্ট মাসে দাম নির্ধারণ হয়ে আছে, কিন্তু সেই আদেশ পালন না করে বিইআরসি, জ¦ালানি বিভাগ ব্যবসায়ীদের বৃদ্ধির সুযোগ দিয়ে রেখেছে। কোনো সভ্য সমাজে ভোক্তার সঙ্গে এ ধরনের কোনো কর্মকা- চলতে পার না।
এই জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, দামের স্ট্যান্ডার্ড কী হতে পারে তা নিয়ে বিইআরসিতে আলোচনা হয়েছে, আমরা বলেছি-গবেষকেরাও কথা বলেছেন। কোথায়, কতো মূল্য হওয়া উচিতÑ সবকিছু তো নির্ধারিত হয়ে আছে। আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য উন্মুক্ত করে দিক, প্রয়োজনে বাইরে লোক এলপি গ্যাস ও সিলিন্ডার সরবরাহ করবে। এখানে তো কোনো প্রতিযোগিতা নেই। ব্যবসায়ীরা যা দাম চাইবেন, তাই-ই দিতে হবেÑ এটা তো হতে পারে না।
আন্তর্জাতিক বাজারে যদি কোনো ভোগ্য পণ্যের মূল্য বাড়ে, তাহলে ব্যবসায়ীরা বিইআরসির কাছে এসে মূল্য নির্ধারণ করে নেবেন। তারা বিইআরসিতে আসেননি কেন। ব্যবসায়ীরা তো নির্ধারণ করে দেওয়া মূল্যে মানেননি। সেটাও যদি তারা বাস্তবায়ন করতেন, তাহলে আমরা বুঝতাম। হাত-পা বেঁধে লুট করার চেয়েও ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিকভাবে মূল্য বাড়িয়ে অর্থ নেওয়া খারাপ উদাহরণ।
সরকার বা জ¦ালানি বিভাগগুলো যথাযথভাবে পালন করছে না। পালন করলে কী আর আমাদের আদালতে যেতে হয়। তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য আমরা কর দিই, আবার তাদের ঘুষের টাকাও গুণতে হয় সাধারণ মানুষকে। কিন্তু তারা আমাদের অধিকার সুরক্ষা দেয় না। বরং তারা ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দেয়। আমাদের কাছ থেকে আরও লাভের সুযোগ তৈরি করে দেয়। সেভাবেই আইন তৈরি ও নিয়ন্ত্রণ করে। তারা যা বোঝেন তাই করেন।