আমার দেশ • নগর সংস্করণ • প্রথম পাতা • লিড ৫
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা : কেন্দ্রের বাইরে ভিড়ে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
সুজন কৈরী : করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যেই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। শুক্রবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। প্রতিটি পরীক্ষার হলে কঠোরভাবে স্বাস্থ্য বিধি মানার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে চিত্র ছিল ভিন্ন।
পরীক্ষা শেষে ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রের ভেতর সামাজিক দূরত্ব মানা হলেও, তা অনেকটা শিথিল ছিলো প্রবেশ পথে।
করোনা মহামারির মাঝে যখন একে একে বাতিল করা হচ্ছে পরীক্ষা, দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, এমন বৈরী পরিস্থিতিতে আয়োজন করা হয় এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা।
পরীক্ষার আগে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে পরীক্ষার্থী এবং তাদের স্বজনদের ভীড় করতে দেখা যায় হলের গেটে। এতে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোর সামনে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়।
রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তেজগাঁও সরকারি কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কলেজসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রের সামনে নির্দিষ্ট সময়ের আগে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন।
নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা পরিমাপ ও হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রগুলোর বাইরের চিত্র ছিল পুরো উল্টো। কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা দেখা যায়নি। একসঙ্গে পাশাপাশি বসে বা জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় প্রায় সবাইকে।
কেউ কেউ আবার গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে প্রবেশের জন্য গেটের মুখে ভিড় করে দাঁড়ান। সবার মুখে মাস্কটাও ঠিকঠাক মতো ছিল না। অনেককেই থুতনিতে মাস্ক পড়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী মাস্ক পরে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন। পরীক্ষা দিতে মাস্ক পরে আসা বাধ্যতামূলক ছিল। তবুও যারা ভুল করে মাস্ক না পরে কেন্দ্রে গিয়েছিলেন, তাদের মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে। সংক্রমিতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের মধ্যে করোনা উপসর্গ ছিল, তাদের আলাদাভাবে বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো প্রতিটা কেন্দ্রে আইসোলেশন কক্ষের ব্যবস্থা ছিল। তাপমাত্রা পরিমাপ করে সবাইকে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হয়েছে।
এ বছর ভর্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন। রাজধানী ঢাকাসহ ১৯টি কেন্দ্রে ৫৫টি ভেন্যুতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, কেন্দ্রের ভেতরে পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থীদের ও কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষামাণ অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে।