দেশে করোনায় গত অর্থবছরে ক্ষতি ১ হাজার কোটি ডলার
সোহেল রহমান : করোনার করাল থাবায় সারাবিশ্বের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। করোনার প্রথম অভিঘাত ঠেলেঠুলে ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই দ্বিতীয় দফা অভিঘাত শুরু হয়ে গেছে। এটি কতদিন দীর্ঘায়িত হবেÑ কারো পক্ষেই সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে করোনার প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাবে নিজ নিজ আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাপ করছে প্রতিটি দেশ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারও বসে নেই। গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, করোনার কারণে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার কোটি ডলার। টাকার অঙ্কের যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৮৪ হাজার কোটি টাকা। এটি আলোচ্য অর্থবছরের জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, কোভিড-১৯ দেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলেছে- তা নিয়ে অর্থ বিভাগ কাজ করছে এবং এটি এখনও চলমান রয়েছে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সহায়তা নেয়া হচ্ছে। আগামী জুনের আগেই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। সে সময় খাতভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব দেয়া সম্ভব হবে। যে অর্থবছর নিয়ে কাজ চলছে, সেটা হলো ২০১৯-২০২০ অর্থবছর। এ সময় টানা তিন মাস দেশের শিল্প কারখানা-অফিস-আদালতসহ সব কিছু লক-ডাউন বা বন্ধ ছিল।
সূত্রমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে জিডিপির আকার ধরা হয়েছিল স্থিরমূল্যে ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু পরবর্তীতে কোভিডের কারণে জিডিপি আকার সংশোধন করে তা ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। একই সঙ্গে প্রবৃদ্ধি হার ২ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমিয়ে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ করা হয়েছে। টাকার অংকে জিডিপি কমেছে প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা। আপাতত এ পরিমাণ অর্থই কোভিডের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে কোভিডজনিত কারণে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব করা সম্ভব না হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ‘বিগত ১২ বছর দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকায় প্রণোদনা প্যাকেজসমূহ দ্রুত ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। ফলে দেশের অর্থনীতি স্বল্প সময়ে কোভিড-পূর্বাবস্থায় ফিরে এসেছে।
কোভিড মোকাবেলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯জনিত অভিঘাত মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী চারটি নীতি-কৌশল অবলম্বন করেন। পরবর্তীতে এরই আলোকে পর্যায়ক্রমে ২৩টি অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও