দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেওয়ায় অর্থনীতি চাঙা হবে : অধ্যাপক আবু আহমেদ
আমিরুল ইসলাম : এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে লকডাউন শিথিল করায় অর্থনীতি কিছুটা চাঙা হবে। রমজানের শুরু থেকে দোকানপাট ও শপিলমল খোলা রাখলে আরও বেশি চাঙা হতো। লকডাউন হচ্ছে অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকর জিনিস। করোনা মহামারিকে অন্যভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে। লকডাউনÑ এর সমাধান নয়।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, সরকারি আমলা, এমপি ও মন্ত্রীরা যারা বেশি বেশি লকডাউনের কথা বলে তারা তাদের বেতনের ৩০ শতাংশ দিয়ে দেবে কিনা গরিব মানুষদের খাওয়ানোর জন্য। গরিব লোকাদের খাওয়ানোর জন্য সরকার একটা ফান্ড করবে সেখানে যারা বেশি বেতন পায় তারা তাদের বেতনের ৩০ শতাংশ সেক্রিফাইস করবে? লকডাউন দিয়ে কাকে মারতে চাওয়া হচ্ছে? অর্থনীতি না বাঁচলে মানুষ বাঁচবে না। তখন সবাইকে না খেয়ে মরতে হবে। ইতোমধ্যে দেশে ৬৬ শতাংশ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। লকডাউন আরও লম্বা করা হলে বাকি মানুষরাও এর সঙ্গে যোগ হবে। সরকার লকডাইন শিথিল করছে, এটা খুব ভালো করেছে। এটি অত্যন্ত উপযুক্ত একটি পদক্ষেপ। অর্থনীতিকে না বাঁচালে লকডাউন দিয়ে মানুষ বাঁচাতে পারবে না। লকডাউন হচ্ছে অর্থনীতির সবচেয়ে বড় শত্রু।
লকডাউন বাংলাদেশের জন্য সমাধান নয়। সমাধান হচ্ছে- হসপিটাল ফ্যাসিলিটি বাড়াতে হবে, আইসিইউ বাড়াতে হবে, অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনীতি চালু রাখতে হবে। কোথাও অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা যাবে না। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এবার ব্যবসা কিছুটা কম হবে। কিছু করার নেই। পুরো মাস খোলা থাকলে ব্যবসা একটু বেশি হতো। এখানো বিকল্প কিছু নেই। অর্থনীতিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। সমাজের মানুষকে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। কাজ থেকে বিরত রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, অনলাইন ব্যবসা এদেশে ভালো হবে না। পৃথিবীর কোনো দেশে শতভাগ অনলাইন ব্যবসা হয়নি। অ্যাডভান্স অর্থনীতিতেও ৫০ শতাংশের বেশি হয় না। ভারতে ৩০ শতাংশের বেশি হয়নি। আামাদের মতো দেশে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ অনলাইন ব্যবসা হতে পারে। অনলাইনকেন্দ্রিক ব্যবসা হতে হলে স্মার্টফোন লাগবে, টিটিংবাজি বন্ধ করতে হবে, রেপুটেশন লাগবে। ধনী লোকদের ক্ষেত্রে এটা সম্ভব। গরিব লোকরা অনলাইনে বেচা-কেনা করে উপার্জন করতে পারবে না। আমাদের দেশে ক্যাশভিত্তিক অর্থনীতি, কার্ডভিত্তিক নয়। আমাদের দেশে এখন ৭০ শতাংশ ক্যাশ পেমেন্ট হয়। মানুষ বাজারে যেয়ে ক্যাশ পে করে খরচ-পাতি করে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনীতি খুলে দিতে হবে এবং কাজ করতে দিতে হবে। শুধু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে কিনা সেটা ভালোকরে তাদরকি করতে হবে। মাস্ক পরা, হাতধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি।
লেখক : বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ