সাধারণ বন্দির জন্য বরাদ্দ ২০.৪০ টাকা, ভিআইপির ২৪.১১ টাকা কারাগারে ইফতারে একটি পিয়াজু বেশি পান ভিআইপি বন্দিরা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : রমজানে দেশের কারাগারগুলোয় ইফতারের সময় উৎসবের আমেজ দেখা যায়। সবচেয়ে বড় আয়োজন হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। বন্দিদের ইফতারের জন্য রয়েছে আলাদা বরাদ্দ। এর মধ্যে সাধারণ বন্দিদের জন্য মাথাপিছু ২০ টাকা ৪০ পয়সা এবং ভিআইপিদের জন্য বরাদ্দ ২৪ টাকা ১১ পয়সা। তবে টাকার ব্যবধান যাই হোক, বাস্তবে সাধারণ বন্দিদের থেকে ভিআইপি বন্দিরা একটি পিয়াজু বেশি পেয়ে থাকেন বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে।
সাধারণ ও ভিআইপি বন্দিদের স্বজনরা বলেছেন, বর্তমান সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে, একজন রোজাদারের জন্য এই বরাদ্দ খুবই কম হয়ে যায়। এর মধ্যেও রয়েছে অনেক অসুবিধা। কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ বন্দিদের ইফতারির জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাথাপিছু ২০ টাকা ৪০ পয়সা। এই টাকার মধ্যে তাদের দেওয়া হচ্ছে ৫ গ্রাম খেজুর, ৫০ গ্রাম মুড়ি, সাড়ে ৭ গ্রাম পিয়াজু (১টি), ১০০ গ্রাম ছোলা, ১টি সাগরকলা, ৭ গ্রাম গুড়, ৫ গ্রাম জিলাপি (১টি), ৩ গ্রাম চিড়া ও পানি। ভিআইপি বন্দিদের মাথাপিছু বরাদ্দ ২৪ টাকা ১১ পয়সা। আর মেন্যুও একই, ব্যবধান শুধু পিয়াজু। সাধারণ বন্দিরা পান একটি পিয়াজু, আর ভিআইপিরা পান দুটি।
সূত্রমতে, রমজান মাস উপলক্ষে কারাগারের সব বন্দিকেই রাতে ও সেহেরিতে মাছ-মাংস দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকে সবজি। তবে যারা রোজা রাখছেন না, তাদের দুপুরের খাবার নিয়মিত দেওয়া হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি এক ভিআইপির স্বজন এই প্রতিবেদককে বলেন, কারাগার থেকে যে ইফতারি দেওয়া হয় তা অনেক কম। সাধারণ ভিআইপি সবার জন্যই বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, বাইরে থেকে ইফতারি দেওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কড়াকড়ি। যদি কোনোভাবে দেওয়ার সুযোগ হয়, তাতে চারগুণ বেশি খরচ পড়ে। তিনি বলেন, কারাগার থেকে যদি ভালো ব্যবস্থা থাকত- তাহলে আমাদের চিন্তা কম হতো।
জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমান ভিআইপি বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার অন্যতম আসামি র্যাবের সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ আনজু বলেন, বন্দিদের বেশিরভাগই রোজা রাখছেন। অন্যান্য সময়ের তুলনায় রমজানে বন্দিদের কাজের মাত্রা অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়। দুপুর ১২টা থেকেই শুরু হয় ইফতারের আয়োজন। রাতে বন্দিরা নিজ নিজ ওয়ার্ডে নামাজ আদায় করেন।
জেলার জানান, নিরাপত্তার কারণে বাইরে থেকে আমরা ইফতার দেওয়ার অনুমতি দিই না। তবে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে মানবিক বিবেচনায় নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী