সুনামগঞ্জে বোরো ধান মাড়াই শেষ পর্যায়ে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
জাকারিয়া হোসেন : সুনামগঞ্জ জেলায় চলতি বছরে বোরো চাষ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাওর এলাকায় জমির পরিমাণ ১৬৫৬৬৫ ও নন হাওরে ৫৭৬৬৫ হেক্টর।
ইতোমধ্যে হাওরের ৯৮ ভাগসহ মোট ৮৭ ভাগ জমির বোরো কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর বোরো আবাদের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২১৯৩০০ হেক্টর।
অনুকূল আবহাওয়া, ধানের নায্য মূল্য নিশ্চিত হওয়া, বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট সময়োচিত পদক্ষেপ; যেমন বোরো মৌসুমের প্রারম্ভেই সুনামগঞ্জ জেলার ৭ হাজার কৃষককে বোরো প্রণোদনা প্রদান, ৩৫ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে হাইব্রিড বীজ সহায়তা প্রদানসহ স্থানীয়ভাবে গৃহীত অন্যান্য কিছু পদক্ষেে ৪০৩০ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত বোরো চাষ সম্পন্ন হয়।
সরকারি প্রণোদনা ও হাইব্রিড বীজ সহায়তা কর্মসূচির কারণে একদিকে যেমন বোরো আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় অন্যদিকে হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
গতবছর হাইব্রিড আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৩৬৫১০ হেক্টর। এ বছর চাষ হয়েছে ৫৭২১০ হেক্টর।
৪০৩০ হেক্টর আবাদি জমি বৃদ্ধি সহ প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত হাইব্রিড আবাদের কারণে গত বছর চালের উৎপাদন যেখানে ছিল ৮৬৩৯৯৩ মে. টন সেখানে এবার উৎপাদন হবে প্রায় ৯ লাখ মে.টন অর্থাৎ উৎপাদন বৃদ্ধি হার ৫.৪২% ।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বে খাদ্য উৎপাদন যেখানে নি¤œগামী সেখানে সুনামগঞ্জ জেলার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির হার ঈর্ষণীয়।
মার্চের শেষ দিকে করোনার প্রদুর্ভাব বদ্ধির কারনে শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকের আবাদকৃত বোরো ধান তাদের গোলায় উঠবে কিনা এ বিষয়ে সন্দেহ যথেষ্টই ছিল। কৃষকরা যাতে বোরো ধান সঠিক সময়ে ঘরে উঠাতে সক্ষম হয় তার জন্য এর করণীয় ঠিক করতে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কয়েক দফা সভা করা হয়।
এছাড়াও ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখা হয়।আর এর ফলশ্রুতিতে সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর ৭০% ভর্তুকিতে কৃষকদের মাঝে ১১৫টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার, ১৯টি রিপার বিতরণ করা হয়।
শ্রমিকের পাশাপাশি বিগত বছরগুলোতে বিদ্যমান, নতুন ও ভাড়া করাসহ ৩ শ কম্বাইন্ড হারভেস্টারসহ শতাধিক রিপার মেশিন ধান কর্তন কাজে অংশগ্রহণ করেছে। ধান কর্তনের সময় যাতে কোন পাকা ধান জমিতে পড়ে না থাকে তার জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি টিম নিরলসভাবে কাজ করেছে।
সর্বোপরি এবারের আবহাওয়া,সকলের সুচিন্তিত মতামত, সঠিক পরিকল্পনা, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় পরিকল্পনা মাফিক কৃষক তার ফসল বোরো ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হচ্ছে।