ইউরোপজুড়ে গণভোটের দাবিতে নতুন মাত্রা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের গণভোটে ইইউ-ত্যাগের পক্ষে গণরায় আসার পর ইউরোপের অন্যান্য দেশের রক্ষণশীল দলগুলোর একই দাবির পালে বাড়তি হাওয়া যোগ হয়েছে। গণভোটের ফলাফল আসার পর ফ্রান্সের ন্যাশনাল ফ্রন্ট দলের নেত্রী ম্যারিন ল্য পেন টুইট করেছেন, ‘ভিক্টোরি ফর ফ্রিডম’। তিনি বলেন, ফরাসিদেরও এখন অবশ্যই একই ধরনের গণভোট পেতে হবে। নেদারল্যান্ডের অভিবাসনবিরোধী রাজনীতিক গ্রিট উইল্ডার্স বলেছেন, এখন একটি ‘নেক্সিট’ ভোট প্রাপ্য নেদারল্যান্ডের। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইইউ রাজনীতিকরা এখন শঙ্কায় রয়েছেন যে, এসবের তোড়ে পুরো জোটের অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যেতে পারে। ল্য পেন যুক্তরাজ্যের গণভোটের প্রশংসা করে টুইট করেছেন, ‘এটি স্বাধীনতার বিজয়। আমি যেমনটা বছরের পর বছর ধরে বলে আসছি, একই ধরনের গণভোট হওয়া উচিৎ ফ্রান্স ও অন্যান্য ইইউ দেশগুলোতেও।’ ম্যারিন ল্য পেন আগামী বছর অনুষ্ঠেয় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী। জনমত জরিপে তিনিই এগিয়ে আছেন অন্য সবার চেয়ে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি হেরেও যেতে পারেন বলে ইঙ্গিত আছে মতামত জরিপে।
গত শুক্রবার, ভিয়েনায় ইউরোপের উগ্র-ডানপন্থী দলগুলোর একটি সমাবেশে ল্য পেন উপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশদের চেয়ে ইইউ ছাড়ার সম্ভবত আরও হাজারটা কারণ আছে ফরাসিদের।’ তিনি বলেন, ইউরোপজুড়ে উচ্চ বেকারত্বে¡র জন্য ইইউ দায়ী। বিশেষ করে, ‘পাচারকারী, সন্ত্রাসী ও অর্থনৈতিক অভিবাসীদের’ ইইউর বাইরে রাখতে ব্যর্থ এ জোট।
এদিকে নেদারল্যান্ডের ফ্রিডম পার্টির নেতা উইল্ডার্স এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের দেশ, আমাদের অর্থ, আমাদের সীমান্ত ও আমাদের নিজস্ব অভিবাসন নীতির দায়িত্বে আমরাই থাকতে চাই।’ তিনি যোগ করেন, ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে নেদারল্যান্ডের সদস্যপদ স¤পর্কে যত দ্রুত সম্ভব ডাচ জনগণের মতামত নেওয়া উচিৎ।’ আগামী মার্চে নেদারল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিছু মতামত জরিপে দেখা গেছে, উইল্ডার্স এগিয়ে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হই, তবে নেদারল্যান্ডে ইইউ ছাড়ার ব্যাপারে গণভোট হবে। ডাচ জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন।’ সম্প্রতি এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, নেদারল্যান্ডের ৫৪ শতাংশ মানুষই এব্যাপারে গণভোট চান। ফিনল্যান্ডের ইইউবিরোধী দলের নেতা টিমো সোইনি বলেন, ‘জাতি তার রায় দিয়ে দিয়েছে। এ গণভোটের পর যুক্তরাজ্য আর ইইউ-এর মধ্যে পরবর্তী আলোচনার ব্যাপারে কথা হওয়া প্রয়োজন।’
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট মার্টিন শুলজ ব্রেক্সিট ইস্যুতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘ব্যাপারটিকে এবার গুরুত্ব সহকারে ও দায়িত্বসুলভভাবে বিবেচনা করার সময় এসেছে। নিজের দেশের জন্য ডেভিড ক্যামেরনের যেমন দায়িত্ব আছে তেমনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যতের জন্যও আমাদের দায়িত্ব আছে। বাজারের স্টারলিং মুদ্রার কী অবস্থা সেটা আপনারাই দেখেছেন আমি চাই না ইউরো মুদ্রার সঙ্গেও একইরকম কিছু ঘটুক।’
অস্ট্রিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান কার্য বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন ইউকের প্রস্থান ইইউ সামলাতে পারবে। কিন্তু অন্যান্য দেশেও ‘ডমিনো ইফেক্ট’ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ