কোভিডের প্রভাবে উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়েছে : অর্থমন্ত্রী
সোহেল রহমান : কোভিড-১৯-এর প্রভাবে ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি সংসদকে এ কথা জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপিত হয়।
বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ-এর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগত এক দশকের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কোভিড-১৯-এর প্রভাবে সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়েছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেকর্ড ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনা ভাইরাসের কারণে তা কমে ৫ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, তবে দেশে কোভিডের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি। বরং বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারীতে অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্বে সাফল্যের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর (৩ জুন ২০২১) পর্যন্ত ছয় বছরে আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব)-এর মাধ্যমে ৬৮টি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজার থেকে ৪ হাজার ৮৩১ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করেছে।
অন্যদিকে একটি কোম্পানিকে ‘কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার’-এর মাধ্যমে সাড়ে ৭ কোটি টাকার মূলধন পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলনের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ৫টি কোম্পানির আইপিও ও ৪টি কোম্পানির কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফারের আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
ইতিপূর্বে বাজেট বক্তৃতা উপস্থাপনকালে গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এক বছর লক-ইনসহ কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা পুঁজিবাজারে অ-প্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের আওতায় ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ৩১১ জন করদাতা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ-পূর্বক ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৮ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন। এর ফলে দেশের পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পুঁজিবাজার শক্তিশালী হয়েছে।
এছাড়া বাজেট বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, সরকার পুঁজিবাজারকে গতিশীল ও উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে নানাবিধ সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। স্টক এক্সচেঞ্জকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও কিছু পদক্ষেপ শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে। যেমনÑ পুঁজিবাজারে ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন চালু করা; আধুনিক পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইক্যুইপমেন্ট যথাÑ সুকুক, ডেরিভেটিভস অপশনস-এর লেনদেন চালু করা; ওটিসি বুলেটিন বোর্ড চালু করা; ইটিএফ চালু করা; ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকুভুক্ত করা ইত্যাদি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর্পোরেট কর হার কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। যা বাস্তবায়িত হলে অধিক সংখ্যক ভাল শেয়ার পুঁজিবাজারে আসবে। সম্পাদনা : রেজা