করোনায় আরও ১৯৯ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১১ হাজার ৬৫১
কেএম নাহিদ : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা দেশে এক দিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৫ হাজার ৭৯২ জনের।
এর আগে, বুধবার ২০১ জন মারা যান, যা একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। সোমবার মারা যান ১৬৪ জন, যা দেশে একদিনে করোনায় তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। মঙ্গলবার মারা যান চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৬৩ জন। এছাড়া, কয়েকদিন ধরে করোনায় মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। গত ১ জুলাই ১৪৩, ২ জুলাই ১৩২, ৩ জুলাই ১৩৪ এবং ৪ জুলাই ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৬৫১ জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ৮৯ হাজার ২১৯ জনে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে সীমান্তবর্তী উপজেলার রুরাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রধান নির্বাহী আব্দুর রহমান এসব তথ্য জানিয়ে বললেন, মারা যাওয়া ওই চারজনেরই সর্দি-জ¦রের মত উপসর্গ ছিল। তার ভাষ্যমতে, মহেশপুরের গ্রামগুলোতে ঘরে ঘরে মানুষ জ¦রে ভুগছেন। বাড়িতে বসেই সাধারণ জ্বরের চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। শুধু শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন।
তাদের প্রতিষ্ঠানের হিসাবে কোভিডের উপসর্গ নিয়ে মহেশপুরে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসাবে উপজেলায় কোভিড শনাক্ত হওয়া আরও ১০ জন মারা গেছেন।
গ্রামে কোভিড রোগী বাড়ার বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের মুখপাত্র সুহাষ রঞ্জন হাওলাদার বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ে শহরের অধিকাংশ সচেতন মানুষ টিকা নিয়েছেন। তারা স্বাস্থ্য সচেতন বেশি। কিন্তু গ্রামের মানুষের মধ্যে তা অনেক কম। যে কারণে দ্বিতীয় ঢেউয়ে গ্রামের মানুষ আক্রান্ত বেশি হচ্ছেন।
যশোর সদর হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকায় বারান্দায় ভ্যানের ওপর কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, যাদের বেশিরভাগই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসছেন। চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য-কর্মীরা। প্রতিদিন মৃত্যু ও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে খবর মিলছে।
জেলার সিভিল সার্জন দপ্তরের চিকিৎসা কর্মকর্তা রেহনেওয়াজ বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় যশোর সদর হাসপাতালে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে উপসর্গ নিয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আরিফ আহমেদ বলেন, বুধবার সকালে হাসপাতালে মোট রোগী ছিলেন ১৫৫ জন। শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সবাইকে শয্যা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে সবাইকে সাধ্যমত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যশোর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান বলেন, গ্রামাঞ্চলের কোভিড রোগীর সংখ্যা এখন বেশি। আর তারা এমন অবস্থায় হাসপাতালে আসছেন যে, সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা এমন বৃদ্ধি পেতে থাকলে অক্সিজেন সংকট তৈরি হবে।