আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৫
ভারি বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে উত্তরাঞ্চলে নদনদীর পানি বাড়ছে, বন্যার শঙ্কা
জিয়াউল হক : কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে চরাঞ্চল ও নিচু এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে, ভাঙন বেড়েছে নদ-নদীতে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। করোনা মহামারী সংক্রমণ যখন ভয়াবহ আকারে বিস্তার লাভ করছেÑ কঠোর লকডাউনে কর্মহীন মানুষের মধ্যে বাড়ছে অভাব অনটন, ঠিক তখনই বন্যা ও নদীভাঙনের আতঙ্কে নদীতীরের বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়ন এলাকার মহানন্দা নদীর ভাঙ্গনে দিশেহারা এলাকার মানুষ। টানা বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে মহানন্দা নদীতে। পানি বেড়ে যাওয়ার ফলে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের কৃষিজমি ও বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। গ্রাম থেকে কয়েক মিটার দূরেই ভাঙ্গনের তা-বলীলা দেখা দিচ্ছে মহানন্দায়।
নওগাঁ জেলার ধামইরহাটের আত্রাই নদীর বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। প্রায় দেড়শো মিটার জায়গা ধসে যাওয়ার যে কোন মূর্হুতে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এতে লোকালয় এবং শত শত সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। সেই সাথে উপজেলা থেকে উপজেলা সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আশংকা রয়েছে। এক্ষুনি ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।
নীলফামারী তিস্তা নদীর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তিস্তা নদীর নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্রীজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
গাইবান্ধায় অবিরাম বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক প্রযুক্তির জিও টিউব ও জিও ব্যাগ ফেলছে।
লালমনিরহাটে গত কয়েক দিনের বর্ষন আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ছুই ছুই করছে। ধীরে ধীরে তিস্তা ভয়ংকর রূপ ধারন করছে। ধরলার পানিও প্রতিদিনই বাড়ছে। ফলে তিস্তা-ধরলার ৬৩ চর প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এই ভাঙনে নদীর পাড়ের মানুষ আতঙ্কিত রয়েছেন।
কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টি ও ভারতের ঢলের কারণে কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলাসহ ১৬টি নদ নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদী সংলগ্ন ৩০টি চরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পাট, সবজি ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। কয়েকদিন ধরে এসব ক্ষেত ডুবে থাকায় ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছে কৃষকরা।
সিরাজগঞ্জের কাছে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় বৃদ্ধি পাওয়ায় সাথে সাথে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এরই মধ্যে জেলার চারটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান