পাটুরিয়া ও বাংলাবাজার ফেরিঘাটে যানবাহন ও যাত্রীচাপ বাড়ছে
মুরাদ হাসান : সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথম দিনে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় পাটুরিয়া-দৌতলদিয়া নৌপথে যানবাহন ও যাত্রী চাপ বাড়ছে। সকাল থেকেই পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় রাজধানী ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এসব যানবাহনগুলোকে ছোট বড় ১৫ টি ফেরি দিয়ে পারাপারে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে অন্যতম মাধ্যম হলো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ। স্বাভাবিক সময়ে এ নৌপথ দিয়ে গড়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার যানবান ও হাজারও যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। তবে করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের সময় এ নৌপথে শুরুমাত্র জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন পারাপার করে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান বলেন, গতকাল সকাল থেকেই পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিধিনিষেধ শিথিল করায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার যানবাহন ও যাত্রী ঘাটে আসতে শুরু করেছে। ঘাট এলাকায় আসা এসব যানবাহন পারাপারে নৌপথে ছোট বড় মিলে ১৫ টি ফেরি চলাচল করছে। ফেরিতে যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীও পার হচ্ছে। নদীতে স্রোত থাকায় এক থেকে দুই ঘন্টা অপেক্ষার পরে যানবাহনগুলো ফেরিতে ওঠতে পারছে।
এদিকে পাটুরিয়া ও আরিচা লঞ্চঘাট মিলে মোট ৩৩ টি লঞ্চ চলাচল করছে বলে জানিয়েছে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার পান্না লাল নন্দি। তিনি বলেন, আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে চলছে ৯ টি লঞ্চ আর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে চলছে ২৪ টি যাত্রীবাহী লঞ্চ। স্বাস্থবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে নৌপথে চলাচল করছে।
বিআইডব্লিউটিএর শিমুলিয়া লঞ্চঘাটের পরিদর্শক মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ও নৌপুলিশ সীমিত সামর্থ্য নিয়ে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার পরও ভয়ঙ্কর করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না ঘাটে আসা যাত্রীরা। পাঁচটি লঞ্চ আটকের পর জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করার জন্য বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
ঈদ-উল-আজহার আগে ও পরে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে স্পিডবোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার ঘাট পরিচালনা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত শেষে সাংবাদিকদের জানান কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন।
তিনি জানান, গত ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী বহনে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের প্রাণহানি হয়। পরে ফেরিতে দুর্ঘটনায় মারা গেছে আরো পাঁচজন। সেই পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে এবারের ঈদে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক জরুরি সভার আয়োজন করা হয়। এতে বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র্যাব, আনসার বাহিনীর কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেয়।
সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আসন্ন ঈদ-উল-আজহার আগে ও পরে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে স্পিডবোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করবে। এমনকি গণপরিবহনেও থাকবে অর্ধেক যাত্রী। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও