১৪২ তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি যে কোনো দিন ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে ভবনের নকশা তৈরির কাজ শেষ
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : ২০১৮ সালের মধ্যেই সরকার ১৪২ তলা ‘আইকনিক টাওয়ার’ নির্মাণের কাজ শেষ করতে চাইছে। এই জন্য কাজ দ্রুত শুরু করার সবরকম প্রক্রিয়া চলছে। এরই অংশ হিসেবে এই ভবন নির্মাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কেপিসি গ্রুপের চুক্তি সম্পন্ন হবে। ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এই ব্যাপারে যে ভেটিং পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল, তা পাওয়া গেছে। এখন চুক্তি করার জন্য কাজ চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ এই চুক্তি করতে চায়।
সূত্র জানায়, সরকারের পরিকল্পনা ছিল মে মাসের মাঝামাঝির আগেই এবং বাজেট প্রস্তাব পাসের আগেই এই ব্যাপারে কেপিসির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করার। কিন্তু এই ব্যাপারে সমস্যা ছিল আইন মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয় এই প্রস্তাবে ভেটিং দেওয়ার জন্য বেশি সময় নেয়। তাদের ভেটিং না হওয়ার কারণে তখন চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। এখন তারা ভেটিং দিয়েছে। সেই হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য এখন আর তেমন কোনো সমস্যা নেই। চুক্তি করার আগে প্রয়োজন ছিল প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন। সেটাও আগেই পাওয়া গেছে।
অর্থমন্ত্রী মনে করছেন, ভবনটি নির্মাণের জন্য কেপিসি গ্রুপের সঙ্গে যে কোনো দিন এখন চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ ব্যাপক। এই কারণে তারা ২০১৪ সাল থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে বহুতল ভবন তৈরি করার জন্য কেপিসি গ্রুপের প্রধান কালী প্রদীপ চৌধুরী আগ্রহ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রীর কাছে। এই জন্য অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই চুক্তি করার জন্য ভবনের নকশা ও আনুষাঙ্গিক নকশা তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে এই ভবনের জন্য যে নকশা তৈরি করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করার জন্য ব্যয় হয়েছে দশ হাজার কোটি টাকা। এই ভবনে আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ভবনের জন্য জায়গাও নেওয়া হচ্ছে। এর পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬০ একর। ভবনের উচ্চতা হবে ১৪২ তলা। ‘আইকনিক টাওয়ার’ হবে এর নামকরণ।
এই ভবনটি নির্মাণ করা হলে তা হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ ভবন। এই ভবন নির্মাণের জন্য এবারের বাজেটে অর্থ বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভবন নির্মাণের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে পিপিপির আওতায়। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিভিত্তিতে ছাড়া এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। সেই জন্য সরকার পিপিপির আওতায় এটা বাস্তবায়ন করছে। এই ভবনের বাইরের অংশের দিকে দেশীয় ইতিহাস ও ঐহিত্যের নান্দনিক বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এই জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ভবনের কাজ শেষ হলে দুই দিক থেকে ’৭১ লেখা দেখা যাবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখারও এটা একটি চেষ্টা। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম