সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় বছরে নিহত ৪৩ হাজার ৮৬৫ জন, রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি
শরীফ শাওন : বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে মোট ৩১ হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটে। এতে নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছেন ৯১ হাজার ৩৫৮ জন। অথচ জাতিসংঘ ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সালকে সড়ক নিরাপত্তা দশক ঘোষণা করে সদস্য দেশগুলোর সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এ অঙ্গীকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ‘নিরাপদ সড়ক দিবস’-২০২১ উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মোঃ. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসেবে দেখা গেছে, বিগত ২০১৫ সালে ৬ হাজার ৫৮১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৬৪২ জন নিহত, ২১ হাজার ৮৫৫ জন আহত হয়েছে। ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩১২ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫৫ জন নিহত, ১৫ হাজার ৯১৪ জন আহত হয়েছে। ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৯৭৯ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন নিহত, ১৬ হাজার ১৯৩ জন আহত হয়েছে। ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৫১৪ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ২২১ জন নিহত, ১৫ হাজার ৪৬৬ জন আহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৫১৬ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৮৫৫ জন নিহত, ১৩ হাজার ৩৩০ জন আহত হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণে বছর ব্যাপী লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকা অবস্থায় ৪ হাজার ৮৯১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৬৮৬ জন নিহত ও ৮ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে।
বিবৃতিতে মহাসচিব বলেন, ধারাবাহিকভাবে তিনবারের ক্ষমতাসীন বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের নির্বাচনী নানা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলেও ৩য় মেয়াদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গাফেলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে, সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে। ১৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হচ্ছে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরীর দবি, সড়ক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচীর বাজেট বাড়ানো, গবেষণা, সভা-সেমিনার, প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে গণসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সড়কে চাঁদাবাজী বন্ধ করা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করা। দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা ১২ লক্ষ ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুত চালকের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে দুর্নীতির লাঘাম টেনে ধরে এসব সংস্থাসমূহের সচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করারও দাবি জানান তিনি।