সরকারি চাকুরেদের জিপিএফ ও সিপিএফ তহবিলের মুনাফার হার কমলো
সোহেল রহমান : সরকারি চাকরিজীবীদের সাধারণ ভবিষ্য তহবিল (জিপিএফ) এবং প্রদেয় ভবিষ্য তহবিল (সিপিএফ)-এর মুনাফা বা সুদের হার কমলো। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের অঙ্কের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য তিন স্তর বিশিষ্ট মুনাফার হার নির্ধারণ করেছে সরকার। এতদিন পর্যন্ত এই তহবিলে যে পরিমাণ অর্থই রাখা হোক না কেন, মুনাফার হার নির্ধারিত ছিল ১৩ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ‘দি জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড রুল্স ১৯৭৯’-এর ১২(১) ধারা এবং ‘দি কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড রুল্স ১৯৭৯’-এর ১২ ধারায় বর্ণিত বিধান অনুসারে ‘জিপিএফ’ ও ‘সিপিএফ’ মুনাফার হার পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের শুরুতে ‘জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড’ (জিপিএফ)-এর প্রারম্ভিক স্থিতি অনূর্ধ্ব ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হলে ১৩ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যাবে। দ্বিতীয় ধাপে অর্থের পরিমাণ হচ্ছে ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে অনূর্ধ্ব ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে মুনাফার হার হচ্ছে ১২ শতাংশ। তৃতীয় ধাপে তহবিলের আকার হচ্ছে ৩০ লাখ ১ টাকা থেকে তদূর্ধ্ব। এক্ষেত্রে মুনাফার হার হচ্ছে ১১ শতাংশ।
অন্যদিকে ‘কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড’ (সিপিএফ)-এর ক্ষেত্রে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রারম্ভে জমাকৃত চাঁদার স্থিতি অনূর্ধ্ব ১৫ লাখ টাকা হলে মুনাফার হার হবে ১৩ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে জমাকৃত চাঁদার স্থিতির প্রারম্ভিক পরিমাণ হচ্ছে ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে অনূর্ধ্ব ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত। এক্ষেত্রে মুনাফার হার হচ্ছে ১২ শতাংশ। তৃতীয় ধাপে জমাকৃত চাঁদার স্থিতির প্রারম্ভিক আকার হচ্ছে ৩০ লাখ ১ টাকা থেকে তদূর্ধ্ব। এক্ষেত্রে মুনাফার হার হচ্ছে ১১ শতাংশ।
প্রজ্ঞাপনে ‘সিপিএফ’-এর বিষয়ে বলা হয়েছে, সকল সিপিএফভুক্ত প্রতিষ্ঠানের (স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, কর্পোরেশন ইত্যাদি) আর্থিক সঙ্গতি একরকম না হওয়ায় প্রতিষ্ঠান/ সংস্থাসমূহ তাদের নিজস্ব আর্থিক বিধিবিধান ও আর্থিত সামর্থ্য অনুযায়ী বর্ণিত স্লাব-ভিত্তিক হারসমূহকে সর্ব্বোচ্চ হার হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে সিপিএফ-এ জমাকৃত আমানতের ওপর হ্রাসকৃত হারে মুনাফা নির্ধারণ করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, যেসব সরকারি কর্মচারী রাজস্ব খাত থেকে বেতন পান, তারা টাকা জমা রাখেন জিপিএফ-এ। আর যারা রাজস্ব খাতের বাইরে থেকে বেতন পান, তারা টাকা রাখেন সিপিএফ-এ।
জিপিএফ-এ জমাকৃত অর্থের মুনাফা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে। এ তহবিলে টাকা রাখলে মুনাফাসহ টাকা দেয় সরকার। ফলে চাকরি শেষে ভালো একটা অঙ্ক নিয়ে ঘরে ফিরতে পারেন কর্মচারীরা ।
অন্যদিকে সিপিএফ-এ যে পরিমাণ টাকা জমা রাখেন কর্মচারীরা, সরকার ওই জমাকৃত টাকার সম-পরিমাণ টাকা অনুদান হিসেবে দেয়। কিন্তু অতিরিক্ত জমার ওপর কোনো মুনাফা দেয় না
জানা যায়, ২৫ বছর চাকরি করলে একজন জিপিএফধারী কর্মচারী ৮০ মাসের মূল বেতনের সমান টাকা পান। কিন্তু একই সময়ে একজন সিপিএফধারী কর্মচারী পান ৫০ মাসের মূল বেতনের সমান টাকা।