জেরোমি পাওয়েলকে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিলেন বাইডেন
রাশিদ রিয়াজ : দ্বিতীয়বারের মত ফেডারেল রিজার্ভের দায়িত্ব পেলেন জেরোমি পাওয়েল। প্রেসিডেন্ট বাইডেন টুইটে বলেছেন ফেডারেল রিজার্ভের নেতৃত্বে ধীরস্থির, স্বাধীন ও কার্যকর নেতৃত্ব প্রয়োজন। যে কারণে জেরোমি পাওয়েলকে বেছে নিয়েছি। ফেডারেল রিজার্ভের ভাইস চেয়ার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ড. লায়েল ব্রায়ানার্ড। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক হারে মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনীতির গতি ধীর হওয়ার সময় তারা ফেডারেল রিজার্ভের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন। সিএনএন
পাওয়েল তার প্রথম মেয়াদে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে। ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি সত্ত্বেও মূল সুদের হার শূন্যের কাছাকাছি রেখে মহামারীর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আক্রমনাত্মক প্রতিক্রিয়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন পাওয়েল। মার্কিন অর্থনীতিবিদদের মতে মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের মধ্যে থাকা আসলে অর্থনৈতিক বিকাশের পক্ষে ভালো। ভোক্তা যখন মনে করে সামনের সময়ে আরও দাম বাড়বে, তখন বর্তমান সময়ে তার কেনাকাটার প্রবণতা বেড়ে যায়। এটি চাহিদা বাড়ায়, দাম বাড়ায়। কিন্তু অর্থনীতির ধীর গতি অথচ মুদ্রাস্ফীতি উচ্চহারে থাকলে তা হয় না। কারণ মূল্যস্ফীতি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পূর্বাভাস।
যখন মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের নিচে থাকে ফেডারেল রিজার্ভ সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করে। এটি নীতি নির্ধারণী সুদের হার কমিয়ে দেয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। মন্দা রোধে এটি কাজ করে। আর যখন ফেড মূল্যস্ফীতিকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে, তখন এটি সংকুচিত আর্থিক নীতি নেয়। ফেডারেল রিজার্ভ বর্তমানে সে ধরনের দিকনির্দেশনাই দিচ্ছে।
খাদ্যপণ্য, জালানির মূল্যস্ফীতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে মার্কিন নাগরিকদের কাছে। পরিবহন টিকিটের দাম বেড়েছে ব্যাপক। কোভিড পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য খাতে কিছু নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেওয়ায় ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী দেওয়া ওষুধের দাম গত এপ্রিল থেকে কমেছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। মেডিকেল কেয়ার সেবার দাম কমেছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। অথচ বেড়েছে আবাসন খরচ, এপ্রিল থেকে এই খরচ বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।
গত বছর যখন করোনার সংক্রমণ প্রথম ছড়িয়ে পড়ে, ভ্রমণের চাহিদা ব্যাপক হ্রাস পায়। মানুষ অনেক শিডিউল পরিবহন বাতিল করে। যারা বেড়াতে যেতে চেয়েছিলেন, তারা সেই পরিকল্পনা পিছিয়ে দেন। এয়ারলাইন্সগুলো একের পর এক উড়োজাহাজগুলোর উড্ডয়ন বন্ধ ঘোষণা করে। কমতে থাকে বিমানভাড়া। তবে এবছর এপ্রিল মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিমানভাড়া আগের বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে সরবরাহ খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। তারা বলছে, অর্থনীতির খাতগুলো স্বাভাবিক হয়ে উঠতে সময় লাগবে। তবে এই সংকট কেটে মুদ্রাস্ফীতি এত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে না তা মেনে নিচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ।