শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী অব্যাহত থাকলেও লেনদেনের ভাটা
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় প্রথম কার্যদিবস রোববারও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে তিন কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী অব্যাহত থাকলেও লেনদেনের ভাটা পরেছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে।
মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি উভয় বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, শেয়ারবাজার নিয়ে আগামী ৭ ডিসেম্বর বৈঠক ডেকেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতবিরোধ কেটে যাবে। আবারও শেয়ারবাজার চাঙ্গা হবে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে আশা করেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টা পার হওয়ার পর বেশকিছু বড় মূলধনের কোম্পানির শেয়ার দাম কমে। এতে দুপুর ১২টার দিকে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অবশ্য সূচকের এ ঋণাত্মক ধারা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় সূচকের উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এতে টানা তিন কার্যদিবসের উত্থানে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়লো ২৬২ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৯টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির দাম। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৮৯৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের দিন মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৪৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। এদিন কোম্পানিটির ১১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওয়ান ব্যাংকের ৩৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ব্যাংক।
ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পাওয়ার গ্রীড, ফরচুন সুজ, আইএফআইসি ব্যাংক, অরিয়ন ফার্মা, সোনালী পেপার ও একমি পেস্টিসাইড। দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো- এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, স্টাইল ক্র্যাফট, সেনা কল্যান ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, আমরা নেটওয়ার্ক, সিভিওপিআরএল, রহিমা ফুড, ইনটেক লি. ও গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স।
অন্যদিকে দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো- ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স মি. ফা. ১, শাহজিবাজার পাওয়ার, দুলামিয়া কটন, নিউ লাইন ক্লোথিংস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক, এনভয় টেক্সটাইল, এমজেএল বাংলাদেশ, একমি পেস্টিসাইড ও ওয়ান ব্যাংক লিঃ। দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৬১ পয়েন্ট। বাজারটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৭টির এবং ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।