ক্ষতির মুখে ঝালকাঠির সাপের খামারিরা
অর্থনীতি ডেস্ক : ২০১৬ সাল থেকে ঝালকাঠিতে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠতে শুরু করে সাপের খামার। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে এ খামার প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন জেলার রাজাপুর ও নলছিটি উপজেলার অনেকেই। সাপ চাষ, বিষ সংগ্রহ এবং বিক্রয় ও রপ্তানির লক্ষ্যে গড়ে ওঠা এসব খামার সরকারি অনুমোদন না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বাণিজ্যিকভাবে খামার গড়তে পটুয়াখালীর সাপচাষী রাজ্জাক বিশ্বাসের কাছ থেকে কলাকৌশল শেখেন বর্তমানে রাজাপুর উপজেলার বাসিন্দা মো. সালাহউদ্দিন মৃধা। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ৫টি গোখরা সাপ নিয়ে চাষ শুরু করেন তিনি। এখন তার খামারে ৩০টি সাপ রয়েছে। কিন্তু সাপের খাবারসহ নানা রকমের আর্থিক খরচ পোষাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। জানান, সাপের খাবার হিসেবে মুরগির বাচ্চা, ডিমসহ নানা উপকরণ কেনা অনেক ব্যয়বহুল। এ ছাড়া লোকবলেরও দরকার হয়। সরকার অনুমোদন দিলে সাপের চাষ ও ব্যবসায়ে ব্যাপক সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে। এতে সহজে লাভবান হওয়াও যাবে।
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার তৌকাঠি গ্রামের সাপ খামারী খায়রুল ইসলাম জিয়াদ। দুজন অংশীদার নিয়ে ২০১৭ সালে সাপের খামার গড়েন তিনি। বলেন, জীবন রক্ষার চেষ্টায় বিভিন্ন মুল্যবান ওষুধ তৈরিতে সাপের বিষ বেশ কার্যকরী। বিষ আমদানিতে প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা খরচ হয়। দেশে সাপের বিশ উৎপাদন করা গেলে একদিকে যেমন বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় হবে অন্যদিকে রপ্তানি করে আয়ও সম্ভব।
জিয়াদ বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী এ ধরনের খামার করতে সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন হয়। আমরা জন্য আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কোনো অনুমোদন পাইনি। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
অনেকের অভিযোগ, সরকারি নিয়ম মেনে সাপের খামার করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েও প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো ফল পাননি। কেউ কেউ সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষা করছেন। আবার অনেকেই খামারের উদ্যোগ ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ ছাহেব আলী বলেন, আমি নলছিটি থেকে একটি সাপের খামারের অনুমোদনের জন্য আবেদন পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমার ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছিল।
তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের খামারের জন্য তারা এখনো রেজিস্ট্রেশন দেয়া শুরু করেননি। তাই যদি কেউ সাপের খামার করতে চায়, তাহলে তাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে। তাদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবো। সূত্র: বণিক বার্তা