সীমান্তে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে ভারত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অর্থনীতি ডেস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, সীমান্তে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে ভারত। এছাড়াও পানি ইস্যুতেও আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার নিজ মন্ত্রণালয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সেই সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চাই। আমাদের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে ড. মোমেন জানান, জেআরসি বৈঠক নিয়ে আমাদের তাগিদ রয়েছে। এছাড়া সীমান্তে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে ভারত। সীমান্তে যেন কোনো সমস্যা না হয়, তা নিয়ে একটি ফর্মুলা দিয়েছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন। সকালে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তাকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সফরের প্রস্তুতি সারতে ঢাকায় এসেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন শ্রিংলা। বৈঠকে সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়ে শ্রিংলা বলেন, আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছি, কিন্তু বড় রকমের কোনো ভিন্নতা পাইনি। আমরা সবুজ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল সহযোগিতার মতো ভবিষ্যৎমুখী বিষয়গুলোর দিকে নজর দিচ্ছি। যেসব বিষয় আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তরুণদেরকে সম্পৃক্ত করবে, যা আমাদের উভয় দেশের জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারে।
গত ১০ বছরে ৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন ঢাকায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে যাওয়া শ্রিংলা। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সোনালী অধ্যায় চলছে বলে দুই দেশের কর্মকর্তারাই বলে আসছেন।
আন্তঃযোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে শ্রিংলা বলেন, কানেকটিভিটির জায়গায় আমরা দুদেশ অনেক ভালো করেছি। ১৯৬৫ সালের আগের পাঁচটি রেল যোগাযোগ ইতিমধ্যে চালু হয়েছে। আশা করি, ৬ নম্বর রেল সংযোগ আগামী বছর চালু হবে। রেল যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি নৌপথসহ অন্যান্য দিকেও যোগাযোগ বাড়ানোর কাজ চলছে বলে জানান তিনি। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে ৫০ মিনিটের আলোচনাকে খুব সফল বলে বর্ণনা করেন।
দুই দেশের সম্পর্কের স্বর্ণ যুগ চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে এই বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছেন, একই বছরে ভারতের রাষ্ট্রপতিও বাংলাদেশ সফর করবেন। এটা একটা রেকর্ড।
আলোচনার বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক ইস্যুজ রয়েছে এবং অনেক পেন্ডিং ইস্যুজ রয়েছে, সেগুলো আমরা যেমন আলোচনা করেছি।
এখানে সামনের দিনে আমাদের যে ইস্যুজগুলো আছে, এখানে কানেকটিভিটি রিলেটেড ইস্যুজ, গ্রিন এনার্জি এবং কোঅপারেশন এনার্জি এবং টেকনোলজির নতুন নতুন যে বিষয়গুলো আছে, এগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।
ঝুলে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সেগুলোর কীভাবে অগ্রগতি করা যায়, তা আমরা আলোচনা করেছি। বর্ডার নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, আরও শান্তিপূর্ণ বর্ডার কীভাবে আমরা করতে পারি, সেটা নিয়েও আলোচনা করেছি।
বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি কোভিড সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার কথা তুলে ধরে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা জানি অনেক ধরনের ভ্যারিয়েন্ট এসেছে, সামনে আরও আসতে পারে। সুতরাং কোভিড কোঅপারেশনও আমাদের মধ্যে চলমান রাখতে হবে।
বাংলাদেশ কখনোই সেইফ থাকবে না, যদি ভারত সেইফ না থাকে। একইভাবে ভারত সেইফ থাকবে না যদি বাংলাদেশ না থাকে। এটা সারা বিশ্বের সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য। সুতরাং আমাদের কোঅপারেশন করা ছাড়া কোনো সুযোগ নাই। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলে শ্রিংলাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শ্রিংলার সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। সূত্র : বিডিনিউজ, বাংলাট্রিবিউন, বাংলানিউজ, জাগোনিউজ