বিশে^র ৫শ ধনীর ১ ট্রিলিয়ন ডলার আয়
রাশিদ রিয়াজ : ব্লুমবার্গের বিলিওনারি সূচকে শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি কোম্পানি টেসলার মালিক এলন মাস্ক গত বছর ১১৮ বিলিয়ন ডলার মুনাফা তুলেছেন। এর আগে জাতিসংঘ বলেছিল একই বছর দেড়শ মিলিয়ন মানুষ দারিদ্রে নিপতিত হবে। এলনের পর ফ্রান্সের প্রসাধনী টাইকুন বার্নার্ড আরনল্ট ৬২.৭ বিলিয়ন এবং গুগলের ল্যারি পেজ ৪৭ ও সের্গেই ব্রিন ৪৫ বিলিয়ন ডলার কামিয়েছেন।
টেক টাইটান বলে পরিচিত জাকারবার্গের পকেটে গেছে ২৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ যতটা শ্রমিকের বছর হিসাবে স্মরণ করা যেতে পারে, ক্রমবর্ধমান মজুরি এবং একটি কঠোর শ্রমবাজারের দ্বারা উদ্দীপিত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ দেওয়া যায়, কিন্তু তারপরও শ্রমিক ও কোম্পানির নির্বাহীদের মধ্যে সম্পদের ব্যবধান ০.০০১ শতাংশ রয়ে গেছে। ২০২১ সাল ধনী হওয়ার জন্য একটি ভাল সময় ছিল।
বার বার, ওয়াল স্ট্রিট মুদ্রাস্ফীতি, সরবরাহ ে চেনে বাধা এবং কোভিড মহামারির মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের উদ্বেগ ইক্যুইটি বাজারগুলোকে পতন ঘটাতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রের ধনী ব্যক্তিরা ফেডারেল রিজার্ভের কাছে একটি বড় আকারে কর সহায়তা টিপস হিসেবে দেন, যা সুদের হার শূন্যের কাছাকাছি রেখে প্রতি মাসে কয়েক বিলিয়ন ডলার আর্থিক বাজারে নিয়ে যেতে সমর্থ হয় দেশটির অর্থনীতি। যুক্তরাষ্ট্র এধরনের মুদ্রা নীতি অনুসরণ করে আর্থিক বাজারে নগদ চলমান অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছে। সন্দেহ নেই কোভি মহামারীটি ২০২০ সালে বিশ্ব অর্থনীতিকে ঝাঁকুনি দিয়েছিল। সেই উদ্দীপনা প্রচেষ্টা ২০২০ এবং ২০২১ সালেও শেয়ারবাজারকে বরং বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ থেকে দূরে সরিয়ে নিতে পারেনি। গত বছর এসএন্ডপি ৫শ সূচক ২৭, ডাও জোন্স ১৯ ও নাসডাক ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে সম্পদের বাজারে মূল্য বৃদ্ধির আঁচ টের পাওয়া যায় ক্রিপ্টোকারেন্সি, কমোডিটি ও সম্পদের মূল্য বৃদ্ধি থেকে।
ব্লুমবার্গ বলছে বিশে^র শীর্ষ ৫শ ধনীর মোট সম্পদের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৮.৪ ট্রিলিয়ন ডলার। যা যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া কোনো দেশের জিডিপি’র চেয়ে বেশি। যে কারণে গত বছর পুরো সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা ধনীদের আরো করারোপে আইন করার জন্যে মুখর ছিলেন। বরং আশ্চর্যজনকভাবে, মাস্কের মতো সুপার বিলিয়নার যিনি টেসলার সিইও, যিনি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে খুব কম বা কোন আয়কর প্রদান করেছেন। তার ট্রিলিয়ন-ডলারের গাড়ি কোম্পানিটি আংশিকভাবে সরকারি সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল, তিনি আরও শক্তিশালী সামাজিক অর্থায়নের জন্য ধনীদের উপর করের বিরোধিতা করে বিশেষভাবে সোচ্চার ছিলেন।
কোভিড মহামারি শুরু হবার পর যুক্তরাষ্ট্রের ধনীরা তাদের মোট সম্পদের বৃদ্ধি দেখেন ৭০ শতাংশ বা ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। আমেরিকানস ফর ট্যাক্স ফেয়ারনেস ও ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিস প্রোগ্রাম অন ইনইকুয়েলিটি ফোর্বসের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট রাজনীতিবিদরা বলছেন বিগত দুই বছরে বিলিয়নারিরা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সামাজিক অবকাঠামো পরিকল্পনায় যে অর্থ দেবেন তা যথেষ্ট হবে। কিন্তু বিলিয়নারীদের কাছ থেকে এধরনের সহায়তার নামে কর আদায়ের প্রচেষ্টা তাদের শাস্তি দেওয়ার সমান বলে মন্তব্য করেন সিনেটর জো মানচিন। এরপর এ প্রচেষ্টা আর আগায়নি।