নতুন দেশে থেকে পোশাকের অর্ডার আসছে পোশাক শিল্পে খাতে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হয়েছে : বিজিএমইএ
মো. আখতারুজ্জামান : তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি বলেন, এক সপ্তাহ আগেও দিনে কয়েক ঘন্টা লোডশিডিং ছিলো। গত কয়েক দিন থেকে তা শুন্যে নিমে এসেছে। বলা যায় পোশাক খাতে বিদ্যুৎতের সমস্যার সমাধান হয়েছে। আগামীতে এই খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলোও সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলেও তিনি জানান।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। মেইড ইন বাংলাদেশ উইক নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ পর্ষদ সদস্যসহ উপস্থিত ছিলেন পোশাকখাতের উদ্যোক্তারা।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে কারখানায়। ব্রæনাই থেকে গ্যাস আসলে গ্যাসের সমস্যারও সমাধান হবে। আমাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে যে সমস্যা হয়েছিল, তার সমাধান হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দরে স্ক্যানিং মেশিন জটিলতায় পড়তে হয়েছিল একসময়। এখন চারটি স্ক্যানার বসানো হয়েছে। প্রায় সময়ই কয়েকটি স্ক্যানার অলস পড়ে থাকে। বলতে পারি, রপ্তানির ক্ষেত্রে ঢাকা বিমানবন্দরেও কোনো জটিলতা নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু কারখানার অর্ডার কমেছিলো। সেটা থেকে কিছুটা উন্নতি করেছে। কারখানাগুলো নতুন নতুন অর্ডার পেয়েছে।
আমরা একদিকে যেমন রপ্তানি বাড়ানোর ক্ষেত্র বাহির করতেছি, অন্যদিকে ব্রান্ডিং করার লক্ষ্যে নানা ধরণের কাজ করে যাচ্ছি। অনেক কারখানার কর্মকর্তা ও পোশাকর্মীদের জন্য মেডইন বাংলাদেশ নাম স্মার্ট কার্ড দেয়া হয়েছে। পর্যায় ক্রমে ভালো ভালো সব কারখানার কর্মীদের এই কার্ড দেয়া হবে।
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক হাসান বলেন, মেডইন বাংলাদেশ ইউক আমরা অনেক কিছুই পেয়েছি। এর মধ্যে নতুন দেশ থেকে অর্ডার পেয়েছি। এর মধ্যে ইরাক অন্যতম। তারা আমাদের তৈরি পোশাকের বেশ কিছু অর্ডার দিয়েছে। বিদেশি যেসব অতিথিরা আমাদের এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তারা আমাদের অনেকে কারখানা পরিদর্শন করেছে। দেখে গেছে বাংলাদেশ পোশাক খাতে কত আধুনিক হয়েছে।
আমরা চাচ্ছি আমাদের যতটুকু মার্কেট, সেটারই প্রপার ইউটিলাইজ করতে। এ জন্য আমরা মেগা ইভেন্টটির আয়োজন করি। আমরা চাচ্ছি আমাদের যে জিএসপি সুবিধা আছে বর্তমানে, সেটা কীভাবে আরও বাড়াতে পারি। সে চেষ্টাও আমাদের আছে।
আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ব্র্যান্ড, সাপ্লাইয়ার ও স্টেকহোল্ডারদের কাছে আমাদের পণ্য তুলে ধরা। কীভাবে আমরা আমাদের দেশকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরব, সেটাও আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। ২০৩০ সালে পোশাক শিল্পের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন হবে। আমাদের মার্কেট শেয়ার এক সময় ২ থেকে তিন শতাংশ ছিল। ধীরে ধীরে এটা আমরা ১৪ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারব। এজন্য আমাদের ভ্যাট, কাস্টমস, বন্ড ইত্যাদি সহজ করার দাবি জানাই। বিদ্যুতের সমস্যা কেটে গেছে। কিন্তু গ্যাস নিয়ে আমরা কষ্ট পাচ্ছি। আশা করছি আগামী দিনে এটাও সমাধান হবে।
ফারুক বলেন, গত ১২ থেকে ১৮ নভেম্বর আমরা বিজিএমইএ’র ইতিহাসে প্রথম বারের মতো ৭ দিনব্যাপী মেগা ইভেন্ট উদযাপন করেছি। এই ইভেন্টের থিম ছিল কেয়ার ফর ফ্যাশন। সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনে সামিট, এক্সপোজিশন, ফটো এক্সিবিশন, কনফারেন্স, ফ্যাশন ইনোভেশন রানওয়ে শো, সাসটেইনেবল ডিজাইন ও ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড, ফ্যাশন ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড, ফ্যাক্টরি ট্যুর, আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের ভ্রমণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নেটওয়ার্কিং ডিনারসহ মোট ১৭টি কর্মসূচি ছিল।
ইভেন্টের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল তিনটি। পোশাক শিল্পকে ও সামগ্রিক বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করা; বিশেষ করে শিল্পের যে প্রকৃত রূপান্তর ঘটেছে তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে শিল্পের ব্র্যান্ডিং করা। রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নের জন্য প্রধান কৌশলগত লক্ষ্যগুলো চিহ্নিত করে শিল্পের জন্য একটি টেকসই রোডম্যাপ তৈরিতে শিল্পের সকল অংশীজনদের সম্পৃক্ত করে এ ব্যাপারে তাদের মতামত নেওয়া। সরকার, ব্র্যান্ড/ক্রেতা, বিভিন্ন সাপ্লায়ার (টেকনোলজি, মেশিন, এক্সসরিজ সরবরাহকারী), শিল্প সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে নেটওয়ার্কিং করা। সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদসহ পোশাকখাতের উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।