অভাব নিয়ে ছোটলোকরা চিল্লাচিল্লি করলে তাদের দাও ডিজিটাল নিরাপত্তার দাওয়াই
বিডি রহমতউল্লা
মধ্যবিত্ত থেকে নীচের দিকের প্রায় সবশ্রেণীতে অবস্থানকারী লোকজনের যে করুন অবস্থায় দিনাতিপাত করছে তার বর্ননা দেয়া মানে এককথায় সমুদ্র পাড়ি দিয়ার সামিল । সার্ব্বিকর্ভাবে এরা দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগের মতো। এর বাইরে কিছুটা স্বচ্ছল, উচ্চবিত্ত, সৎ বিত্তশালী লোকজনও কিন্তু দারুন আতংকে দিন কাটাচ্ছে । দ্রব্যমূল্যের অকল্পনীয় দাম আর জীবন চালানোর ব্যয় বৃদ্ধিতে বহু কষ্টে সঞ্চিত পূঁজি ভেঙ্গে হতাশায় এ স্বচ্ছল, উচ্চবিত্ত, সৎ বিত্তশালী লোকজনও প্রতিটিা মূহুতর্ই এক ভয়াল আতংকে দিন কাটাচ্ছে ।এ যেন অনেকটা নদীভাঙ্গার দুশ্যের মতো। ঐ ৬০/৭০ ভাগ অভাবী লোকদের যাদের নদী তীরের কাছাকাছি বাড়ীঘরে আছে বলে বিবেচনা করেন, যারা মানুষ হিসেবে এদেশে বসবাস করার অবস্থা একেবারে হারিয়েই ফেলেছেন, তারা ছাড়া নদীতীরের একটু দূরের লোকজন যাদেরকে স্বচ্ছল, উচ্চবিত্ত, সৎ বিত্তশালী বলে উল্লেখ করেছিলাম তারা এখোন মহাআতংকে আছেন, নদীর দিকে তাকিয়ে শঙ্কা নিয়ে ভাবছেন অভাবটা, দেশের সংকটটা, দারিদ্রের মহামারীটা সবকিছু দুমড়িয়ে মুচড়িয়ে যদি আমাদের দিকে হাত বাড়ায় , তখোন আমাদের কি হবে !! দেশে কভিডের পরে সরকার বলছে ২০% লোক চরম দারিদ্র সীমার নীচে আর সানেম বলছে এটা ৪০% ভাগের মতো । সমাজের খোঁজ নিয়ে এবং নির্মোহ পযর্বেক্ষন করলে এ ৬০ভাগের কম হওয়ার কথা নয় বলেই আমার কাছে মনে হয়।
জীবনে দেশের এই জুয়া খেলায় তাহলে জিতছে কারা !! জিতছে ওরা, ওই যে দেশের ৩৮ ভাগের সম্পদের মালিক বনে যাওয়া ১০ ভাগ লোক !! বাংলাদেশ পরিসংখ্যান খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০১৬-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন বলছে, দেশের মোট আয়ের ৩৮ শতাংশের বেশি সম্পদ মাত্র শীর্ষ ১০ ভাগ ধনী পরিবারের। আর শীর্ষ পাঁচ ভাগ পরিবারের আয় মোট জাতীয় আয়ের প্রায় ২৮ শতাংশ। [বণিক বার্তা ১৮ অক্টোবর ২০১৭] । এতো ৫ বছর আগের হিসেব । এ চেতনাধারীরা, স্বাধীনতার বরকন্দাজেরা পরের ৫ বছরে কিনা করেছে, এতো আমরা দেখতেই পাচ্ছি । কারণ বাংলাদেশের লুটোরার দ্রæত অর্থ উপাজ্জর্নে বিশ্বে ইতোমধ্যেই শীর্ষ স্থান দখল করে রেখেছে । [Bangladesh has topped the list of countries that saw the quickest growth in the number of ultra-wealthy people between 2012 and 2017, according to a new report from New York-based research firm Wealth-X. [The New Age September 12, 2018]
আরো সম্পদ লুট, পাচার কিই আর বাকী রেখেছে !! দেশের ব্যাংকে এদের টাকা রাখার জায়গা আর হচ্ছে তাই সুইস ব্যাংক, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য দুবাই ব্যাংকে টাকা রেখেছে এবং রেখেই যাচ্ছে । এরা আরো ভাবছে দেশে থাকলেতো কোন না কোন “ছোটলোকে”র পড়শী হয়ে থাকতে হবে তাই ভিন্ দেশে নানারকম “বেগম পাড়া” বানিয়েও নিচ্ছে । কিন্তু মুশকিলে পড়ে গেলো ওখানের ”শ্রমজীবি বাংলাদেশী”রা এসব লুটেরাদের সব খবরই জানতে পেরে হৈ হুল্লোর শুরু করে দিয়েছে । আবার এদিকে নানা ক‚কীতির্র জন্য কে কখোন “স্যাংশনে” [Sanction]পড়ে যায় , এ নিয়েও বেশ দূশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে । ভাবলো দেশে যদি কোন একটা হাল্কা আইন করিয়ে নেয়া যায় তাহলেইতো কেল্লা ফতে । সব ”দূগর্ন্ধময় অবৈধ কাল “ টাকাগুলোতে সামান্য নাকে খত দিয়ে যদি হালাল করে নিতে পারি , তাহলে কার্গো বিমান ভাড়া করে “বীর” বেশে দেশে ঢুকে কোন একটা খেতাব বাগিয়ে নেয়া যাবে । যেমন কথা তেমনি কাজ । হাতে হাতে ফলও পেয়ে গেলো । আর দেশে গেলে যদি দেশের “ছোটলোকে”রা চিল্লাচিল্লি করে তাহলে আমাদের তো “ ডিজিটলি নিরাপত্তা” আইনের দাওয়াইতো আছেই । এটা দিয়ে মুস্তাকের মতো জেলে পুরেই মেরে ফেলা যাবে । বাহ্ , কেল্লা ফতে । জয় চেতনার জয় !!