শেয়ারবাজারে দর উত্থানের চেয়ে পতন দ্বিগুন
মাসুদ মিয়া : সরকারি ছুটির কারনে গতকাল বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়নি। মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিনে লেনদেন পরিমাণ কমেছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দর উত্থানের চেয়ে পতন ১ দশমিক ৯৩ গুন বেশি হয়েছে। শেয়ারবাজার উত্থান হবে জানিয়ে গত মঙ্গলবারে রেগুলেটর (বিএসইসি) প্রধান বলেছিলেন, মার্চের শুরু থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার। আসবে সুখবর। সেই বলার প্রতিফলন প্রথম দুইদিন (বুধবার ও বুহস্পতিবার) না থাকলে পরের দুই দিন ( রোববার ও সোমবার) ঠিকই দেখা মিললো শেয়ারবাজারে। কিন্তু পরের দিন মঙ্গলবার লেনদেন কিছুটা ভাটায় পড়েছে। তবে বর্তমান তুলনায় এ ধরনের লেনদেন খারাপ না বলে জানান শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। লেনদেন কমার পাশাপাশি ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এরপরও বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। তবে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত আপর দুই সূচক কমেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে এ বাজারটিতেও দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকে ব্যপক অস্থিরতা ছিল। সাড়ে চার ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক অন্তত ১২ বার ওঠানামা করে। সূচকের উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স দুই পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬২ পয়েন্টে থিতু হয়। অবশ্য প্রধান মূল্যসূচক সামান্য বাড়লেও পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি অপর দুই সূচক। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ১০ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১০টির এবং ১৮৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯টির শেয়ারের দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ কমে ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে। এতে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে ১৮৯টিতে দাঁড়িয়েছে। তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার দিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৪৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৭৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। লেনদেন কমলেও বাজারটিতে টানা তিন কার্যদিবস ছয়শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো। এর আগে গত দেড় মাসের মধ্যে ডিএসইতে টানা তিন কার্যদিবস ছয়শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হতে দেখা যায়নি। সর্বশেষ ১৬, ১৭ এবং ১৮ জানুয়ারি টানা তিন কার্যদিবস ছয়শ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল।
এদিন টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৭ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনিমি সি ফুডের ৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৩ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এডিএন টেলিকম, বসুন্ধরা পেপার, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, রূপালী লাইফ, ওরিয়ন ফার্মা এবং শাইনপুকুর সিরামিকস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৬৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৭টির এবং ৮২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।