ঈদে বাড়ি ফেরা নিরাপদ হবে তো?
ড. বদরুল হাসান কচি
মুসলিমদের সবচেয়ে বড় উৎসব বছরে দুটি ঈদ। তার মধ্যে একটি ঈদুল ফিতর নিকটে আসন্ন। সেই আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে ইতোমধ্যে। কারণ ঈদ মানেই আনন্দের উচ্ছ্বাস সব প্রাণে। প্রয়োজনের খাতিরে রাজধানীতে বসবাস করে দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ। ঈদের ছুটিতে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে প্রায় সকলে নাড়ির টানে ছুটে যায় নিজ নিজ বাড়িতে। এখানেই মূলত শঙ্কা। অল্প সময়ে সকলের একসঙ্গে যাওয়া আসা ব্যাপারটি রীতিমতো যুদ্ধ জয়ের মতো কাহিনী। আর জয় করতে গিয়েই ঘটে যায় নানান রকম দুর্ঘটনা। প্রত্যেক ঈদে অনেকের ঘরে আনন্দের বদলে নেমে আসে শোক। একজন ব্যক্তি মানেতো একটি পরিবার; দুর্ঘটনায় কেউ নিহত বা আহত হওয়া মানে পুরো পরিবারই শোক কিংবা দুর্ভোগটি বহন করতে হয়। রাজধানী থেকে প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে বাড়ি যাবার উপায় সাধারণত তিনটিÑ সড়ক, রেলপথ ও নৌপথ। তার মধ্যে রেল যাত্রা অনেকটা নিরাপদ হলেও বাকি দুইটি পথে যাত্রা মানেই শঙ্কা।
সড়কে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বারেবারে বেরিয়ে এসেছে একই তথ্য। খানাখন্দ সড়ক, অদক্ষ চালক কিংবা হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, রাস্তায় ডিভাইডার না থাকা, অধিক যাত্রীর চাপ থাকায় দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছার তাড়না, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ইত্যাদি প্রধানত দায়ী। অন্যদিকে লঞ্চ ডুবির মতো ভয়ানক ঘটনা তো আছেই। ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী তোলা মূলত লঞ্চ ডোবার কারণ। রাজধানী থেকে প্রায় ১০ লক্ষ লোক নৌপথে বাড়ি ফেরে বলে জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ-এর তথ্য মতে।
আনন্দের সময়টিতে শোক নেমে আসার এই পরিস্থিতি উত্তরণে প্রথমত দরকার সচেতনতা। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করার উন্মাদনায় কোনো সতর্ক ছাড়াই গন্তব্যের পথে যাতে না ছুটে সেই বিষয়ে যাত্রীদের সচেতন করার উদ্যোগ দরকার আছে। তাছাড়া হাইওয়ে পুলিশকে তীক্ষ্ম নজর রাখতে হবে যাতে দক্ষ প্রশিক্ষিত চালকের হাতে গাড়িটি থাকে এবং লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী বহনে নজরদারি রাখা ভীষণ দরকার। আমরা জানি, ‘আনন্দ কর সতর্কতার সঙ্গে’ এমন একটি কথা প্রচলিতও আছে।
লেখক : আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন