জুনের মধ্যেই রিজার্ভ গণনা ছাড়া আইএমএফের সব শর্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে
আমিনুল ইসলাম : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসেবে জুড়ে দেওয়া সংস্কারের অগ্রগতি সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দাতা সংস্থাটির আরোপিত শর্ত বিপিএম৬ এর আওতায় নেট ইন্টান্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) গণনা পদ্ধতি ছাড়া অন্যান্য শর্তগুলো আগামী জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকর গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সংস্কার সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আইএমএফের সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ডলারের একক রেট নির্ধারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রিনীতির ভুমিকা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানিতে ভর্তুকি কর্তন, ঋণের যথাযথ ব্যবহার, খেলাপি হ্রাস, সুদের হারের সীমা তুলে দেওয়া, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শে কার্যকরী পরিবর্তন এবং এসব প্রতিষ্ঠানের পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার ও ব্যাংক কোম্পানি আইন সংস্কার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর রউফ তালুকদার। আর আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতিতে রিজার্ভ গণনার (এনআইআর) প্রকৃয়াধীন রয়েছে এবং এটি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও এক বৈঠকে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের ১ম কিস্তির ঋণের অর্থের ব্যবহার, জিডিপি, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা অগ্রগতি আইএমএফের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।
এদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে কিছু রিফর্ম (সংস্কার) নিয়ে কাজ করছি। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার একাধিক রেট একটিতে নিয়ে আসা, সুদহার বাজারমূখী করা ও রিজার্ভ হিসাব আইএমএফ এর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। রিজার্ভ হিসাবে আমাদের গ্রস হিসাবটিও থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আইএমএফ এর ‘স্টাফ ভিজিট একটি নিয়মিত কাজ। সদস্য সব রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির আলোকে সংস্থাটি সংস্কার নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে নিয়মিত তদারকি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থনৈতিক সূচকগুলোর হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আলোচনা করেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে।
এখন থেকে এনবিএফআই পর্ষদে এক কোম্পানির দুই ব্যক্তি থাকতে পারবেন না
নিজস্ব প্রতিবেদক: এখন থেকে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) পরিচালনা পর্ষদে একটি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের একজনের বেশি ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন না। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পরিচালক নিয়োগে বিষয় নির্দেশনার স্পষ্টীকরণ করে দেওয়া সার্কুলারে বলা হয়েছে, কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পক্ষে একের অধিক ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক নিযুক্ত হতে পারবেন না।
কোনো ব্যক্তি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকা অবস্থায় তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে মনোনীত অন্য কোনো ব্যক্তি উক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবেন না। কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে কোনো প্রাকৃতিক ব্যক্তিসত্ত¡া বিশিষ্ট ব্যক্তি শেয়ারধারকের পক্ষে অপর কোনো ব্যক্তি প্রতিনিধি পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হতে পারবেন না। এছাড়া আগের দেওয়া অন্যান্য সব নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর ১৮(ছ) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জারি করা এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।