অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমলেও দাপট দেখিয়েছে বীমা খাত
মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার গতকাল সপ্তাহর দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমলেও দাপট দেখিয়েছে বীমা খাত। গতকাল বীমা খাতের ৫৭টি কোম্পানির মধ্যে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে চারটির কমেছে আর অপরিবর্তিত থাকে ১১টি কোম্পানির শেয়ারের দর ১টি কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়নি। গতকাল শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বীমা কোম্পানিগেুলো এমন দাপট দেখালেও সার্বীক শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের এক ঘণ্টার মাথায় ডিসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ১৩ পয়েন্ট। তবে প্রথম দুই ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। ফলে নিচের দিকে নামতে থাকে সূচক এবং দিনের লেনদেন শেষে সবকটি সূচকের পতন হয়।
অবশ্য এর মধ্যেও দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত রাখে বীমা খাতে। এমনকি চারটি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম সার্বীক ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে। দিনের সর্বোচ্চ দামে এ চার বীমা কোম্পানির বীপুল পরিমাণ শেয়ারের ক্রয় আদেশ আসলেও বীক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে।
এ চার বীমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স এবং ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বীমা খাত এমন দাপট দেখালেও তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি অন্যান্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে সব খাত মিলে ডিএসইতে ৭০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে ৮৪টির এবং ১৯০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসেই মূল্যসূচক কমলো।
সূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৩৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে জেমিনি সি ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বীচ রিসোর্টের ২৬ কোটি ১২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনেক্স ইনফোসিস, ইস্টার্ন হাউজিং, পেপার প্রসেসিং, আমরা নেটওয়ার্ক এবং ইন্ট্রাকো ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বীক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৬টির দাম বেড়েছে। বীপরীতে দাম কমেছে ৭১টির এবং ৮১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।