গতবারের তুলনায় এই অর্থায়ন ৪৬ শতাংশ বেশি জলবায়ু খাতে এডিবির রেকর্ড প্রতিশ্রুতি ১০ বিলিয়ন ডলার
এস.ইসলাম জয় : [১] এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক(এডিবি) বাংলাদেশসহ সদস্যভূক্ত দেশগুলোর জন্য ২০২৩ সালে রেকর্ড পরিমাণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এ বছর ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। জলবায়ু খাতে এতো পরিমাণে অর্থ আর কখনও দেয়নি এডিবি। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তার উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলিকে (ডিএমসিএস) সাহায্য করার জন্যই এই অর্থায়ন। ২০২২ সালের তুলনায় এই অর্থায়ন প্রায় ৪৬ শতাংশ বেশি।
[২] গতকাল বৃহস্পতিবার এডিবি’র প্রধান কার্যালয় ম্যানিলা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। [৩] এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ২০২৩ সালে রেকর্ড পরিমাণ জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পৃথিবীকে উষ্ণতা থেকে কিছুটা হলেই পরিত্রাণ দিতেই এডিবির এই উদ্যোগ। যে কারণে ৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ড প্রতিশ্রুতি। এর মধ্যে সংস্থাটির নিজস্ব রিসোর্স ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন এবং ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংস্থাটি নানা উ?স থেকে সংগ্রহ করে অর্থায়ন করেছে।
[৪] জলবায়ু খাতে গত চার বছরে(২০১৯-২০২৩) এডিবি অর্থায়ন করেছে ১০ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অথচ এই সময়ে প্রতিশ্রুতি ছিল ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সংস্থাটি প্রতিশ্রুতির থেকে বেশি অর্থায়ন করেছে। এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলাবায়ু খাতে অর্থায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
[৫] সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, বর্তমানে নানা কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে যা ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ২০২৩ সাল সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল। আমাদের অঞ্চলে চরম উষ্ণতা দেখা দিয়েছে, মারাত্মক জলবায়ুর প্রভাবে জন জীবনও অতিষ্ঠ হয়েছে।
[৬] তিনি আরও বলেন, এই সংকট জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। সেইসঙ্গে আর্থিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রয়োজন জীবাশ্মমুক্ত জ্বালানি। জলবায়ু পরিবর্তনের ধারা বন্ধ করেই আমাদের অগ্রগতি করতে হবে। কার্বন নিঃস্বরণ রেট শূন্যতে নামাতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে গভীরভাবে আমরো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের অবশ্যই একসাথে কাজ করতে হবে। [৭] সংস্থাটি জানায়, এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশ্বব্যাপী কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের অর্ধেকেরও বেশি উৎপত্তি হয়। ২০৫০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে কার্বন নিঃস্বরণ শূন্যে নামাতে প্রতি বছর আনুমানিক ৩ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে।
ড. ইউনূসকে হয়রানির জন্য সরকার কিছু করছে না : আইনমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : [১] ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে করা মামলা ঘুষ দিয়ে আপসের চেষ্টা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে হয়রানির জন্য সরকার কিছু করছে না। শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সরকারি দপ্তর দায়িত্ব পালন করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের মন্ত্রী তার নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
[২] সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই আইনমন্ত্রী বলেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সাধারণত আমি কোনো মন্তব্য করি না। কিন্তু নোবেল জয়ী ড. ইউনূসের মামলাকে কেন্দ্র করে সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। তাই এই বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি আজ কথা বললাম। আইনমন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে বিদেশে মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে। অপপ্রচার হচ্ছে।
[৩] তিনি বলেন, আমরা কারো অঙ্গুলি হেলনে চলি না। দেশে আইন আছে, আমরা সেই আইনে দেশ চালাব। অকাট্য প্রমাণ থাকার পরেও বিদেশে ছড়ানো হচ্ছে তার (ড. ইউনূস) বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সেগুলো নাকি মিথ্যা এবং বলা হচ্ছে হয়রানির জন্য নাকি এটি করা হয়েছে, এসব অভিযোগ সত্য নয়।
[৪] আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের আদালত, বিচার বিভাগ এবং বাংলাদেশের মর্যাদা, গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচারের ধারাবাহিকতাকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য একটি মামলাকে কেন্দ্র করে অপ্রচার হচ্ছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যেভাবে হচ্ছে সেটি মোকাবিলা করার জন্যই আজকে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি। সংবাদ মাধ্যমে আমরা সত্য তুলে ধরব।
[৫] নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা ও সাজার বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, সরকার ড. ইউনূসকে হয়রানি করার জন্য কিছু করছে না। সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করছে না। যে মামলা হয়েছিল সেটি শ্রমিকেরা করেছিলেন, তারপরে শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিদপ্তর তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
[৬] আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা, বিচার বিভাগ এ দেশের সব মানুষের। এদেশের মানুষেরই দায়িত্ব এগুলোকে রক্ষা করা এবং এগুলোর কাজ সঠিকভাবে চলতে দেওয়া। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন, অপরাধ করলে সকলকেই আইনের মাধ্যমে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।
[৭] ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা ও সাজা পরবর্তী ঘটনার বিষয়গুলো তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টযেখানে সরকার , বিচার বিভাগ এবং দেশের ব্যাপার জড়িত এবং যখন দেশের মর্যাদা হেয় করার প্রচেষ্টা চলে, তখন সরকার নিশ্চুপ থাকতে পারে না। সেজন্যই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে যে মামলা হয়েছিল তার কার্যাবলি ও পরিপ্রেক্ষিত ব্যাখা করার জন্যই মন্ত্রীকে সংবাদ সম্মেলন ডাকতে হয়েছে।