এস.ইসলাম জয়: দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতিবাজ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবেন। কে কতটুকু প্রভাবশালী তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। যে কোনো দুর্নীতিবাজ অপরাধী আমাদের কাছে সমান।
গতকাল বুধবার সেগুন বাগিচায় দুদকের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন,২০১৫ সালে দুদক কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। তবে ২০১৬-তে আমরা অনেকটা সফল হয়েছি। যেমনটা আপনারা দেখেছেন জিডিপি’র ক্ষেত্রে। আগের চেয়ে জিডিপি হার বেড়েছে (৭.৫)। সারাদেশে দুর্নীতি কমেছে। দুর্নীতি কমলে দেশের দারিদ্র্যের হার কমে, অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হয়। আর দুর্নীতি প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দুদক।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, কেউ কোনো প্রভাব খাটাতে আমার এখানে আসেন না এবং এখন পর্যন্ত একটি ফোনও আসেনি। সংসদ বদির কথা উল্লেখ করে বলেন, সেও তো প্রভাবশালী ছিলেন,তার তো সাজা হয়েছে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রপতির কাছে দুদকের পক্ষ থেকে ৭টি ক্যাটাগরিতে ৩২ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে ভূমি সংক্রান্ত, বিদ্যুৎ, পাসপোর্ট, টেলিফোন, ব্যাংকিংখাতসহ বিভিন্ন বিষয়। ভূমি সংক্রান্ত সব প্রতিষ্ঠান এক ছাদের নিচে আনা, গ্যাসসহ অন্যান্য বিল তিন মাসে একবার নেওয়া, সরকারের সব ধরনের ক্রয় বিক্রয় ই-টেন্ডারের মাধ্যমে করা, রাস্তা নির্মাণের জন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে পাঁচ বা দশ বছরের চুক্তি করা। যাতে রাস্তা ভেঙে গেলে তারা মেরামত করতে বাধ্য থাকেন। ফলে ঠিকাদারদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতি অনেকটা কমে যাবে।
তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের হয়রানির কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, কেউ যদি হয়রানির শিকার হন তাহলে সরাসরি আমাকে জানাবেন। সঠিক নিয়ম মেনে ব্যাংক লোন দিতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রতি এবং সঠিক জামানত (লোনের ক্ষেত্রে), তথ্য দিয়ে গ্রাহককে লোন নিতে অনুরোধ করেন। যাতে তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না উঠে।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়,২০১৫ সালের দুদকে মোট অভিযোগ এসেছে ১০ হাজার ৪১৫টি। যার মধ্যে অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়েছে এক হাজার ২৪০টি, প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়েছে ১৬৫টি, মামলা হয়েছে ৫২৭টি, পুরনো মামলাসহ ২০১৫ সালে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে ৬১৪টি, নিষ্পত্তি হয়েছে ১৮৮টি মামলা, সাজা দেওয়া হয়েছে ৬৯টি মামলায়, খালাস দেওয়া হয়েছে ১১৯টি মামলায়। ফলে সাজা দেওয়ার হার ৩৭ শতাংশ। ২০১৬-তে বিচারিক আদালতে সাজার হার দাঁড়িয়েছে ৫১ শতাংশ। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু ।