বারবার উচ্ছেদেও দখলমুক্ত হচ্ছেনা গুলিস্তানের ফুটপাত
মবিনুর রহমান: বারবার উচ্ছেদ করার পরও দখল মুক্ত করা যাচ্ছেনা রাজধানীর গুলিস্তানের ফুটপাত।
এক সপ্তাহ আগে জিপিএ থেকে ফুলবাড়িয়া এলাকায় অবৈধ দোকান-পাট উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের পরের দিন থেকেই আবারো সে জায়গা আগের চেহারায় ফিরে যায়। দেখে বোঝার উপায় নেই এখান থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এ যেন ইঁদুর বিড়ালের খেলা। এমনটাই মন্তব্য করলেন পথচারি ঢাবির ছাত্র ফিরোজ কবীর। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকায় ফুটপাতে হাঁটার সময় তিনি এসব কথা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন।
তিনি বলেন, গত ২৭ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা, ফুটপাতের দোকান-পাট উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু ওই জায়গা তিন চারদিনের মধ্যেই আবার দখল করা হয়েছে। আগের চেয়ে বেশি জায়গা জুড়ে দোকান বসেছে। এ কারণে এখানে প্রচ- যানজট লেগেই থাকে। পাশাপাশি ফুটপাত না থাকায় সাধারণ মানুষের চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে।
পথচারীরা বলেন, লোক দেখানোর জন্য উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের পর পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আবার দোকান বসা শুরু হয়। যোগাযোগমন্ত্রী যেদিন এই এলাকা দিয়ে কোথাও যান সেদিন ফুটপাত বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া যেদিন ভিআইপি (রাষ্ট্রপতি- প্রধানমন্ত্রী) যান সেদিন রাস্তার দু-পাশ বন্ধ করে দেয়া হয়। তাদের দেখানো হয় ফুটপাতে কোনো দোকান বসে না।
পথচারীরা আরও বলেন, ফুটপাতের দোকান মালিকরা লাইনম্যানের মাধ্যমে চাঁদা দেয়। চাঁদা তিন ভাগে ভাগ হয়। পুলিশ, ডিসিসির কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই টাকা ভাগ করে নেন।
ফুটপাত দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দক্ষিণের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিসিসির দক্ষিণের ফুটপাতও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য অনেকবার অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু উচ্ছেদের পর আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে ডিসিসি, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
গুলিস্তানে ডিউটিরত পুলিশের একজন এসআই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালীরা অর্থের বিনিময়ে ফুটপাতে দোকান বসায়। আমরা তাদের বসতে না দিলে তারা আমাদের ক্ষমতা দেখিয়ে বদলির হুমকি দেয়। তাদের জন্য গুলিস্তান এলাকায় যানজট লেগে থাকে ।
জিপিওর মোড়ে পসরা সাজিয়ে বসেছে এমন একজন ফুটপাত দখলকারীর কাছে জানতে চাইলাম, উচ্ছেদের পরও কেন তারা ফুটপাত দখল করে রেখেছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মোটা অংকের টাকা অগ্রিম দিয়ে তিনি ফুটপাতে দোকান বসিয়েছেন। বললেইতো উঠে যাওয়া যায় না।
কাকে টাকা দিয়েছেন, এমন প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন। আপনারা কী কিছুই বুঝেন না। সম্পাদনা: শারমিন আজাদ