সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আবারও শ্রেষ্ঠ রামপুরা ট্রাফিক জোন যানজট নিরসনে শিল্পাঞ্চলে ট্রাফিকের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
সুজন কৈরী: গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা। মেরুল বাড্ডার প্রধান সড়কে হঠাৎ তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়কটিতে একদিকে অফিসগামী লোকজন ও অন্যদিকে অসংখ্য পরীক্ষার্থীর যাতায়াত রয়েছে। যার ফলে সড়ক জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সড়কে পানি জমে থাকার কারণে এক লেনে যানবাহন চলাচল করছে। এজন্যে এই যানজটের সৃষ্টি। গত বছরের মত আজও সড়কে তাৎক্ষণিকভাবে পাম্প বসিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর পানি নিষ্কাশন হয়ে গেলে তিন লেন দিয়েই যানচলাচল শুরু করে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক উত্তর বিভাগের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোন এভাবেই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে বলে গতকাল দুপুরে এ প্রতিবেদককে জানালেন জোনটির সিনিয়র এসি মো. আবু ইউসুফ।
তিনি বলেন, ট্রাফিক উত্তর বিভাগ বিশেষ করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোন সবসময়ই যানজট নিরসনের চেষ্টা করে আসছে। এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণের ফলে কিছুটা হলেও জনসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করা যায়। আর এতেই শত কষ্টের মাঝেও একটু প্রশান্তি পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, গত বছরও একই সড়কে পানি জমে ছিল। যার ফলে সড়কটিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সহযোগিতায় একটি পানির পাম্প কেনা হয়। পরে ওই পাম্প বসিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হলে সড়কটিতে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, মেরুল-বাড্ডা কাঁচাবাজার সড়কটি প্রায় ২০ গজ স্থান নিচু হওয়ায় তাতে পানি জমে থাকে। সুয়ারেজের পানি এবং মেরুল-বাড্ডার মাছ বাজারের পানি এসে ওই পানির সাথে যুক্ত হয়। কাঁচাবাজার অংশ থেকে রামপুরা ব্রিজ ক্রমাগত উঁচু হওয়ায় সুয়ারেজের পানি আটকে থাকে ফলে ওই সড়কে যানচলাচলে বিঘœ ঘটে। এ কারণে শুধু সুয়ারেজের লাইন সংস্কার করলে হবে না; সেই সঙ্গে সড়কটিও উঁচুু করা হলে ওই সড়কে যানজট অনেকাংশে লাঘব হবে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে জনসেবা ও সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় টানা সপ্তমবারের মত শ্রেষ্ঠ হয়েছে ডিএমপির নবসৃষ্ট রামপুরা ট্রাফিক জোন। ডিএমপির সদর দফতরে গত মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় শ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্বাচিত হয় জোনটি। পরে ডিএমপি কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া জোনটির সিনিয়র এসি মো. জাহাঙ্গীর আলমকে পুরস্কৃত করেন। এছাড়া ট্রাফিক পূর্ব বিভাগও সপ্তমবারের মতো শ্রেষ্ঠ হওয়ায় জোনটির ডিসি মোহাম্মদ মইনুল হাসানকেও পুরস্কৃত করেন কমিশনার।
জোনটির সিনিয়র এসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর এ জোনটির সৃষ্টি করা হয়। এরপর থেকে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও জনকল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন জোনটির সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারি। এ জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন, ব্যতিক্রমী, সৃষ্টিশীল ও ফুলেল শুভেচ্ছাসহ বিভিন্ন কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এর ফলশ্রুতিতেই টানা ৯ বারের মতো ট্রাফিক পূর্ব বিভাগে ডিএমপির ২২ ট্রাফিক জোনের মধ্যে রামপুরা জোন টানা সপ্তমবারের মতো শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক জোন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। তিনি বলেন, রামপুরা ট্রাফিক জোন নতুন নতুন কিছু ব্যতিক্রমী সেবাধর্মী ও উৎসাহমূলক কার্যক্রম করে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে ট্রাফিক সচেতনামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি ট্রাফিক আইন মেনে চলায় পথচারী ও সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা। স্থায়ী যানজট নিরসনে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকাকে নতুনভাবে সাজানো ও নির্বিঘেœ যাতায়াতের জন্য লেন তৈরি করা। রামপুরা ট্রাফিক জোন এলাকায় বিভিন্ন সময় জনগণের সাথে মতবিনিময় ও সচেতনামূলক কার্যক্রমের পাশপাশি জনগণকে সাথে নিয়ে ট্রাফিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রোডে জনগণের যাতায়াত সহজের লক্ষ্যে রিক্সা লেন তৈরি করা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক ইন্টারসেকশন ও রাস্তার স্থায়ী ও অস্থায়ী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু