নানা আয়োজনে উদযাপিত হলো হুমায়ূনের জন্মদিন
মবিনুর রহমান: নানা আয়োজনে উদযাপিত হলো নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৬৮তম জন্মদিন। গাজীপুরের নুহাশপল্লী, লেখকের জন্মভূমি নেত্রকোনা ছাড়াও দেশে ও দেশের বাইরে নানা স্থানে জন্মদিনের কর্মসূচি পালন করেন ভক্তবৃন্দ ও পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল রোববার গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে নুহাশপল্লীতে সকাল সাড়ে ৯টায় তার দুই ছেলে নিষাদ, নিনিত ও স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে কবর জিয়ারত ও মুনাজাত শেষে নুহাশপল্লীতে স্থাপিত হুমায়ূন আহমেদের ম্যুরালের সামনে আপেলতলায় কেক কাটেন তার দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিত। সকাল ১০টার দিকে প্রয়াত লেখকের দুই ভাই জাফর ইকবাল ও আহসান হাবিবসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তার কবর জিয়ারত করেন। এ সময় শতাধিক ভক্ত, গণমাধ্যমকর্মী ও এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের বলেন, হুমায়ূন আহমেদকে প্রকৃতভাবে জানতে হলে তার একটা, দুইটা বই পড়লে হবে না। তার সবগুলো বই পড়তে হবে। কারণ তার দর্শনের সংমিশ্রণগুলো একটি বইতে পাওয়া যাবে না।
অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিগুলো এখন দেশের বাইরেও ভিন্ন ভাষায় প্রচার হচ্ছে। এটা ভালো যে, মানুষ তাকে আরও ভালোভাবে এবং বেশি জানতে পারছে। তবে সেগুলো নিয়ম মেনে হচ্ছে কিনা এটা জানার বিষয়। কারণ, হুমায়ূন আহমেদের উত্তরাধিকার হলো তার সন্তানেরা। তারা রয়েলিটি পাচ্ছে কিনা বা তাদের অনুমতি নিয়ে প্রচার হচ্ছে কিনা সেগুলো দেখা দরকার।
এছাড়াও জন্মভূমি নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় হুমায়ূন আহমদের জন্মবার্ষিকীতে নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে। নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে নিজের প্রতিষ্ঠিত স্কুল শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে সকালে কর্মসূচি শুরু হয়। বিদ্যালয় মিলনায়তনে কুরআন খতমের পর হুমায়ূনের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা অর্পণ করা হয়। সকাল ১১টায় বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে বঙ্গবাজার ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে ৬৮তম জন্মদিনের কেক কাটেন প্রয়াত লেখকের চাচা আলতাবুর রহমান। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে কেন্দুয়া উপজেলা সদরে হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি সংসদ ও চর্চা সাহিত্য আড্ডা যৌথ আয়োজনে কেক কাটা, আনন্দ শোভাযাত্রা, হুমায়ূন আহমেদের বই পড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার ডাক নাম ছিল কাজল। বাবার রাখা তার প্রথম নাম শামসুর রহমান। পরে তিনিই ছেলের নাম বদলে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। ক্যান্সারে ভুগে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তার মৃত্যু হয়। এরপর গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে তাকে সমাহিত করা হয়। সম্পাদনা: ইসমাঈল হুসাইন ইমু