পেট্রল পাম্পে টয়লেট নির্মাণে মালিক পক্ষের অসহযোগিতা
ফয়সাল খান: রাজধানী ঢাকার পাবলিক টয়লেট সমস্যা সমাধানে পেট্রল পাম্পে কয়েকটি এনজিওর সহায়তায় গত বছর টয়লেট নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয় দুই সিটি কর্পোরেশন। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও পাম্প মালিকদের নানা অজুহাত আর গড়িমসিতে আলোর মুখ দেখেনি উদ্যোগটি। ফলে প্রায় ১৬০ কোটি মানুষের এই নগরীতে থেকেই যাচ্ছে পাবলিক টয়লেটের সংকট।
গত রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ডিএনসিসির বাজেট উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক নিজের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে বলেন, পেট্রল পাম্প মালিকদের টয়লেট নির্মাণের জায়গার জন্য বেশি চাপ দিলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। রাজধানীর টয়লেট সমস্যা সমাধানের জন্য পেট্রল পাম্পের মালিকদের বার বার বুঝানোর চেষ্টা করা হলেও তারা জায়গা দিতে রাজি হচ্ছে না। জায়গা সংকটের কারণে টয়লেট নির্মাণও সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান মেয়র।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ৪টি অত্যাধুনিক টয়লেট নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তেজগাঁও, মহাখালী কাঁচা বাজার, গাবতলী, নাবিস্কো এলাকার এসব টয়লেট নারী পুরুষের পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদেরও ব্যবহার উপযোগী বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। নতুন করে আরও ৬টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জুলাই মাসে এগুলোর কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হাতেগোনা কয়েকটি পাম্পে টয়লেট নির্মাণ করা হলেও মালিকদের গড়িমসি আর নানা অজুহাতে হচ্ছে না অন্য পাম্পগুলোতে। রাজধানীর পরিবাগে অবস্থিত শাহজাহান এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মুকুল জানান, গত রমজানে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে তাদেরকে টয়লেট নির্মণের জায়গা চেয়ে চিঠি দেয়। কিন্তু জায়গা কম থাকায় তাদের নিজস্ব টয়লেটটি সংস্কার করে সবার ব্যবহারের উপযোগী করার কথা জানান। এছাড়া বেশ কয়েকটি পাম্পে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকায় তারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফার্মগেট এলাকার পেট্রল পাম্পের এক কর্মচারী জানায়, পাম্পের ভেতরে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হলে জনসাধারণের আসা যাওয়ার ফলে ব্যবসায় বিঘœ ঘটবে।
এদিকে, ডিএনসিসি মেয়র জায়গা পেলে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করার ঘোষণা দিলেও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি