বিড়ম্বনার সূতিকাগার
সঞ্জয় দেবনাথ
‘ঈদ’, শব্দটি শুনলেই নেচে ওঠে মন। আভিধানিক অর্থে ঈদ অর্থ খুশি বা আনন্দ। বাংলাদেশে ঈদ মানে শহর ফাঁকা করে নাড়ীর টানে গ্রামে যাওয়া। এক অভূতপূর্ব আবেগের মোহনা হয়ে ওঠে ঈদ। বাংলাদেশে ঈদ যেন নিজের শৈশবে ফিরে যাওয়া। কচিকাঁচাদের কাছে ঈদ মানে হাসি রাশি রাশি। রঙ বেরঙের জামা-কাপড়া, খেলনা, ঈদ সালামি, আরও কত কী! ঈদে সবাই আনন্দ করে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ঈদ হয়ে ওঠে সকলের অনুষ্ঠান। কিন্তু নানা অব্যবস্থাপনায় ঈদে ঘরমুখী, নীড়মুখী মানুষের কাছে ঈদ হয়ে ওঠে বিড়ম্বনার প্রতিশব্দ। যানজট তো আছেই। ভাঙাচোরা, খানাখন্দকে ভরপুর রাস্তা যেন অত্যধিক নীড়মুখী মানুষের চাপে হয়ে ওঠে মৃত্যুকূপ। এমন কোনো ঈদ নেই, কোনো না কোনো জায়গায় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে না। গতবছর কয়েক ডজন মানুষ ঈদের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই হয় সড়কজনিত ত্রুটি নয়তো চালকদের বেপরোয়া ড্রাইভিং এর কারণে। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ আরও সজাগ হলে বেপরোয়া ড্রাইভাররা বেলাইন ছেড়ে লাইনে আসতে বাধ্য হতো। কিন্তু ঈদ আসলেই গণপরিবহন থেকে ট্রাফিক পুলিশদের চাঁদাবাজির কলঙ্ক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। এটা লজ্জাজনক। ড্রাইভাররা সঙ্গত কারণে টাকা খাওয়া ট্রাফিক পুলিশদের নির্দেশে তেমন একটা গা করে না। আর কিছু কিছু জায়গায় সড়কের নড়বড়ে অবস্থার কারণে সড়ক মড়কে পরিণত হয় নীড়মুখী মানুষের জন্য। দেখা যায়, সড়কের কাজ গত বছর করা হয়েছে তা বছর না পেরোতেই ভেঙেচুরে যা তা অবস্থা। এসব কিছু ঈদের আনন্দকে ম্লান করে। তারপরও মানুষ নীড়ের টানে সব বিড়ম্বনা হাসিমুখে মেনে নেয়। ঘরে ফেরার উচ্ছ্বাসতায় ঢাকা পড়ে বিড়ম্বনার কালো মেঘ। সবার সচেতনতা ও কর্তাবাবুদের দায়িত্বশীলতা পারে সার্বজনীন ঈদকে বিড়ম্বনামুক্ত করতে।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন