সংখ্যালঘু হত্যা ও সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়ায় ১০ জেলায় গোয়েন্দা নজরদারি
দীপক চৌধুরী : একের পর এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর চাঞ্চল্যকর ও পরিকল্পিত হত্যা এবং হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে এ ক্ষেত্রে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
জানা গেছে, বিশেষ করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ও ‘এলিট’ শ্রেণির ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা তীক্ষ্ম নজর রাখছে। খুলনা বিভাগীয় পুলিশ প্রধান (ডিআইজি) মো. মনিরুজ্জামান নিজেই এই নজরদারির বিষয়টি তদারকি করছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
গতকাল ঝিনাইদহে সদরে মন্দিরের সেবায়েত শ্যামানন্দ দাস কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি সদর উপজেলার উত্তর কাষ্টসাগরা গ্রামের শ্রী শ্রী রাধামদন গোপাল মঠের সেবায়েত। এর আগে গত ১০ জুন পাবনার সদর উপজেলার হিমাইতপুর গ্রামের শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমের (হিমাইতপুর ধাম) সেবায়েত নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে (৬২) কুপিয়ে হত্যা করে দৃর্বৃত্তরা। এ ঘটনার তিন দিন আগে ৭ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের মহিষারভাগাড় এলাকায় হিন্দু পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলিকে (৭০) কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুবর্ৃৃত্তরা।
খুলনা বিভাগের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা সম্পর্কে জানতে চাইলে গতরাতে পুলিশ ও র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, সনাতন ধর্মালম্বীদের উপাসনালয়, আশ্রম, গির্জা ও খ্রিস্টান মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। মসজিদও এ তালিকা থেকে বাদ নেই।
তারা জানান, হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের মালিকানাধীন বড় ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক ও মালিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তাদের ওপরও চোখ রাখছেন গোয়েন্দারা। তবে নিরাপত্তার নামে তাদের স্বাভাবিক চলাফেরায় কোন বিঘœ সৃষ্টি যেন করা না হয়Ñ এই বিষয়ে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একজন কর্মকর্তা জানান, গুরু, ফাদার ও যাজকদের ওপর নজরদারি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে-এটা ঠিক। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যত দ্রুত সম্ভব সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, নজরদারি বাড়াতে গিয়ে কোনো গোয়েন্দা সদস্য বাড়াবাড়ি করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় (প্রশাসনিক) ব্যবস্থা নেওয়া হবে।