প্রয়োজনীয় ৩টি মাসয়ালা
হুমায়ুন আইয়ুব: ১. মোবাইলে কুরআনের অ্যাপস নিয়ে টয়লেটে যাওয়া বৈধ কি?
বর্তমানে অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইলগুলোতে গুগল অ্যাপস-এ কুরআন শরিফের একটা অ্যাপস পাওয়া যায়। আরবি-বাংলা অর্থসহ এই কুরআনটি অনেকে পড়েন। সঙ্গেও রাখেন। প্রশ্নটা হলো, এই মোবাইলসহ তো টয়লেট বা নাপাক জায়গায়ও যায়। কুরআন অ্যাপস সঙ্গে রাখাটা বা টয়লেটে যাওয়া কতটা বৈধ? মুফতিদের অভিমত হলো, কুরআন অ্যাপস যদি মোবাইলের স্ক্রিনে ভাসমান অবস্থায় না থাকে তাহলে সঙ্গে রাখা বা টয়লেটে যাওয়া যাবে। আর যদি স্ক্রিনে খোলা অবস্থায় হয় তাহলে সঙ্গে নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করা বৈধ নয়। গোনাহ হবে। ফতোয়ায়ে হিন্দিয়ার গ্রন্থকার বলেছেন, যদি আংটি বা এ জাতীয় কিছুর গায়ে কুরআনের আয়াত লেখা থাকে অথবা আল্লার নাম লেখা থাকে তা উন্মুক্ত করে টয়লেটে প্রবেশ করা মাকরুহ। আর যদি ঢেকে দেয় বা কোথাও রেখে প্রবেশ করে তাহলে অসুবিধা নেই। দুররুল মুখতার গ্রন্থকার লিখেছেন, যদি ঢেকে রাখা হয় তাহলে টয়লেটে প্রবেশে বাধা নেই। তবে এইভাবে কুরআন সঙ্গে নিয়ে টয়লেটে না যাওয়াটা উত্তম।
২. অজু ছাড়া মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনে কুরআন আয়াত ধরা বা পাঠ করা যাবে?
কুরআনুল কারিম অজু ছাড়া ধরা-ছোঁয়া যাবে না। মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ হলো, যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ যেন কুরআন স্পর্শ না করে। (সূরা ওয়াকিয়া-৭৯)। হজরত আব্দুল্লাহ বিন আবু বকর বিন হাজম বলেন, রাসুল (সা.) আমর বিন হাজম-এর কাছে এই মর্মে চিঠি লিখেছিলেন যে, পবিত্র হওয়া ছাড়া কুরআন কেউ স্পর্শ করবে না। (মুয়াত্তা মালেক : ৬৮০)। কুরআন-সুন্নাহর ভাষ্যমতে, কুরআনুল কারিম অজু ছাড়া ধরার অনুমতি নেই। তাই কাগজে বা স্ক্রিনে লিখিত বা অঙ্কিত কুরআন অজু ছাড়া ধরার সুযোগ নেই। কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনেও কুরআনের আয়াত ভেসে উঠলে সেই স্থানটি ছোঁয়া বা ধরার অনুমতি নেই। তবে অজু ছাড়া কুরআন পাঠ করতে পারবে। সেটা কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনে দেখেও পারবে।
৩. হজরত হাসানের কানে নবীজির আজান
শিশু জন্মের পর কানে আজান দেওয়া সুন্নত। তিরমিজি শরিফে হজরত আবু রাফে সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল সা. কে দেখেছি, হজরত ফাতিমার গর্ভে হাসান রা.-এর জন্ম হলে রাসুল সা. নামাজের আজানের মতো হাসানের কানে আজান দিয়েছেন। হজরত হাসান ইবনে আলী সূত্রে বর্ণিত রাসুল সা. বলেছেন, নবজাতক জন্ম নিলে ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দিবে। ফলে মাতৃকা রোগ শিশুকে আক্রান্ত করতে পারবে না। (বায়হাকি শরিফ)।
খ.শিশুর হৃদয় পবিত্র করবে: জন্মের পর আল্লাহর পবিত্র নাম তার হৃদয় পবিত্র করবে। বিশ্বাসের ডানা প্রসারিত হবে। শয়তানের প্ররোচনা থেকে নিরাপদ থাকবে। শয়তান শিশুর মন মেজাজ পরিবর্তনের আগেই আল্লাহ নামে সে শান্ত হয়ে যায়। তরবিয়াতে আওলাদ ফিল ইসলাম ।
আজান দিবে কে? : ছেলে বা মেয়ে জন্মের পর ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দিবে। মৃদু ও সহনীয় আওয়াজে দেওয়া উত্তম। আজানের জন্য মসজিদ থেকে মুয়াজ্জিন ডেকে আনতে হবে না। যে কেউ দিতে পারবে। এমনকি মহিলারাও। মহিলা নাপাক থাকলেও সমস্যা নেই। এমন কী প্রসূতি নিজেও দিতে পারবে। ছেলে হলে আজান দেওয়া হয়, মেয়ে হলে দেওয়া প্রচলন চরম ভুল। আবার আজান শিশুর কানে না দিয়ে ঘরের বাইরে দেওয়া হয় এটাও ভুলপ্রথা।
যড়সধঁহধুঁন@ুধযড়ড়.পড়স