জাফর আহমদ: কাওরান বাজারের পশ্চিম পান্থপথের রাজধানীর অভিজাত এলাকার রোড ডিভাইডারের বড় গাছগুলো মারা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে এ সব গ্ছা বড় হওয়ার সাথে সাথে খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় খাদ্য না পাওয়ার কারণে এ সব গাছ মারা যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায় হোটেল সোনারগাঁও মোড় থেকে রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত রোড ডিভাইডারের উপর অসংখ্য গাছ রয়েছে। এর মধ্যে স্কয়ার হাসাপাতাল ও এনভয় গ্রুপের সামনে ৬টি বড় এবং ছোট্ট ৭টি গাছ মারা গেছে। এর মধ্যে বড় একটি গাছ অনেক আগেই মারা গেছে। পাতা ঝরে গেছে। বাকি ৫টি বড় ও ৬টি ছোট্ট গাছ গত ছয় সাত মাসের মধ্যে মরেছে। এখনো এ সব গাছের পাতা ঝরেনি। অপেক্ষা দমকা হাওয়ার। কেন এ সব গাছ মরেছে-এর কোনো জবাব নেই। স্থানীয় কয়েকটি দোকানদার জানান, বড় গাছগুলোর বয়স স্কয়ার হাসপাতালের সমান প্রায়। বসন্ত এলেই গাছগুলোর পাতা ঝরে যায়। আবার নতুন পাতা গজায়। কিন্তু এবার তার আগেই গাছগুলোর পাতাগুলো ঝরে গেছে, গাছগুলো মারা গেছে। এ কারণেই পাতা ঝরে গেছে-এমন মন্তব্য আশপাশের দোকানদারদের।
হাসপাতালের সামনে অপেক্ষামান কুমিল্লার সুদ্রা তৈয়ব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইসলাম বলেন, গাছগুলো দুটি কারণে মরে যাচ্ছে-এমন হতে পারে। প্রথমত: দুপাশে বহুতল ভবন রয়েছে। এবং ডিভাইডারের উপরের গাছগুলো বেড়ে ওঠার কারণে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এ কারণে প্রয়োজন মতো পানি পাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত: বায়ু -ল থেকে যে পরিমাণ খাদ্য উপাদান পাওয়ার কথা সে পরিমাণ পানি পাচ্ছে না। গাছগুলো যত বড় হচ্ছে তত বেশি খাদ্য উপাদানের প্রয়োজন বাড়ছে। কিন্তু মাটি ও বায়ুম-ল থেকে এ সব খাদ্য উপাদান পাচ্ছে না। এ কারণে গাছগুলো মরে গেছে। আগামীতে বাকি গাছগুলোও মরে যেতে পারে।
গাছগুলোর গায়ে দেখা যায় লাইন রসি বাঁধা। এ সব রসি দিয়ে আগে সেখানে কোনো ব্যানার টানানো ছিল। এখন সে সব ব্যানার নেই কিন্তু এখনো সে সব রসিও অংশ বিশেষ রয়ে গেছে। যা গাছগুলোর শরীর কেটে ভেতরে ঢুকে গেছে। বড় গাছগুলোর মৃত্যুর এটাও অন্যতম কারণ হতে পারে।
নগরের ডিভাইডারের মধ্যে থাকা গাছগুলো রক্ষার জন্য বনবিভাগের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত। তিনি বলেন, পুরো পান্থপথই হলো নর্দমার উপরে। এর উপর কংক্রিটের সড়ক, তার উপর এ সব গাছ লাগানো হয়েছে। জানি না এ সব গাছ লাগানোর সময় নিচের কংক্রিট সরানো হয়েছিল কিনা। এ গাছ মরার দুটি কারণে হতে পরে। প্রথমত: এ সব গাছ বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিকড় নিচে নর্দমায় নেমে গেছে। এ কারণেই গাছ মারা যাচ্ছে। দ্বিতীয় কারণ হতে পারে গাছগুলো বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিকড় বড় হচ্ছে। শিকড় নিচে কংক্রিটের সাথে বাঁধা গ্রস্ত হওয়ার কারণে আর প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করতে পারছে না। এ কারণে গাছগুলো মরে যেতে পারে। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন