উম্মুল ওয়ারা সুইটি: বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে চলে আসা শরণার্থীদের দেশে ফিরিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মিয়ানমার। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একসঙ্গে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও টেকসই জীবন ব্যবস্থার জন্য আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে দেশটি।
তবে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়াসহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে যাচাই-বাছাই করতে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এই তথ্য জানান। গত তিন দিন ধরে ঢাকায় সফররত মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলের অং সান সুচির বিশেষ দূত চিউ তিন এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যদের অনুষ্ঠিত বৈঠক নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সম্পর্কে মাহমুদ আলী বলেন, চিও তিনের সঙ্গে আলোচনার সময় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রাখাইন মুসলমানদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা। জবাবে চিও তিন দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করবেন বলে আশ্বাস দেন। মন্ত্রী আরও বলেন, বিশেষ দূতের সফর দুদেশের মধ্যকার জটিল বিষয়ে আলোচনার পথ সুগম করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমারের নিবন্ধিত শরণার্থী, অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিক ও নবাগতদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের দাবি জানায় এবং এ লক্ষ্যে একটি কর্মকৌশল নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আলোচনায় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে আলোচনাধীন দুইটি সমঝোতা স্মারক (নিরাপত্তা সংলাপ ও সহযোগিতা এবং বর্ডার লিয়াজোঁ অফিস) দ্রুত স্বাক্ষরের বিষয়ে উভয় পক্ষ সম্মত হয়। তাছাড়া উচ্চপর্যায়ের সফর বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে দুপক্ষ একমত হয়।
মাহমুদ আলী বলেন,মিয়ানমার প্রাথমিকভাবে গত দুই মাসে রাখাইন রাজ্য হতে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারীদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে তাদের নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার দাবি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরুর আগ্রহ প্রকাশ করে। চিউ তিনের সঙ্গে বৈঠকে রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলমান জনগোষ্ঠীর গণহারে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণের কারণ অনুসন্ধান ও মূল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মিয়ারমানকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে এ সমস্যা বারবার তৈরি না হয়।
মাহমুদ আলী জানান, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরের পর থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে ৬৫ হাজারের মতো রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া তিন লাখ রোহিঙ্গা আগে থেকেই বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। সম্পাদনা: এনামুল হক