হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় চার হামলাকারীর নাম-পরিচয় নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়
রিকু আমির : গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীর মধ্যে চারজনের নাম-পরিচয় নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড় চলছে। তারা হচ্ছেন- রোহান ইমতিয়াজ, নির্ব্রাস ইসলাম, মীর সাবিহ মুবাশ্বের ও আন্দালিব আহমেদ।
সাইট ইন্টেলিজেন্সে প্রকাশিত অস্ত্র-পোশাক-পতাকাসহ পাঁচ জনের ছবি ও ‘অপারেশন থান্ডার বোল্টে’ নিহত হওয়ার পর যে পাঁচজনের ছবি পুলিশ প্রকাশ করেছে, সেসব ছবির সঙ্গে ফেসবুকের বিভিন্ন একাউন্ট থেকে প্রকাশিত পারিবারিক বা ব্যক্তিগত ছবির মিল রয়েছে। অবশ্য পুলিশ প্রকাশিত নামের সঙ্গে ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত নামের মিল নেই। মা ও বাবার সঙ্গে স্কলাসটিকা স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী রোহানের একাধিক ছবি ফেসবুকে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, রোহানের বাবা ইমতিয়াজ খান বাবুল গত বছরের ২৮ এপ্রিল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রাজধানীর ৩১নং ওয়ার্ডে (মোহাম্মাদপুর) কাউন্সিলর পদে অংশ নিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত এই কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রতীক ছিল ‘রেডিও’। নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানকের ছবি এবং স্বাক্ষর সম্বলিত লিফলেটও ছাপিয়েছিলেন। সেখানে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় হিসেবে ৩১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে দাবি করেছিলেন।
ইমতিয়াজ খান বাবুল সর্বশেষ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বিদায়ী কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ফিবার রেফারি।
রোহানের মা স্কলাসটিকা স্কুলের শিক্ষিকা। দুই বোন ও একভাই রোহানের এবং তারা মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, রোহান গেলো মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন। নিজ ফেসবুক একাউন্ট থেকে দেয়া পোস্টের মাধ্যমে সন্তানকে ফিরে আসার আকুতি জানিয়েছিলেন ইমতিয়াজ খান বাবুল। যদিও সেই আইডি এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর এ প্রতিবেদককে বলেন, রোহান নিখোঁজ- এ বিষয়ে তার বাবা ইমতিয়াজ খান বাবুল গত জানুয়ারিতে আমাদের থানায় জিডি করেছিল। আমরা তদন্ত করে জানতে পারি, সে জঙ্গি কানেক্টেড হয়ে পড়েছে। পরে আমরা দেশের সব বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছিলাম, যাতে সে দেশ ছাড়তে না পারে। উচ্চ প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়েও রোহানকে আমরা বের করতে পারিনি।
রোহানের পারিবারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, তাদের কেউ আত্মগোপন করেনি, তারা আমাদের আয়ত্বের মধ্যেই আছেন।
রোহানের মতো এতো তথ্য পাওয়া যায়নি নির্ব্রাস ইসলাম সম্পর্কে। সূত্রে জানা গেছে, নির্ব্রাস ইসলাম নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। সাবেক সহাপাঠীরা সাইট ইন্টেলিজেন্সে প্রকাশিত ছবি শনাক্ত করে ফেসবুকে তার ছবি ও আংশিক পরিচয় তুলে ধরেছেন।
ছবিসহ মীর সাবিহ মুবাশ্বের নামের আরেকজনের আংশিক পরিচয়ও এসেছে ফেসবুকে। তথ্য অনুযায়ী মুবাশ্বের স্কলাসটিকার ছাত্র। এ লেভেল পরীক্ষার আগে গত মার্চে মুবাশ্বের নিখোঁজ হন। অন্যদিকে, আন্দালিব আহমেদ নামের আরেকজনের তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে। তিনি মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলেন। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম